Wednesday, March 21, 2018

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে মুক্তির আবেদন ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, 

আমি বিশেষ্য বিশেষন দিয়ে তোষামোদি করতে জানিনা। তাই সরাসরি আমার কিছু না বলা কথা এবং কিছু হতভাগা মুক্তিযোদ্ধাদের করুন ইতিহাস আপনার সদয় অবগতির জন্য মিডিয়ার সাহায্য নিতে বাধ্য হলাম।
আপা, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুজিবনগরে প্রশিক্ষণ নেয়া যোদ্ধা।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ২রা মার্চ জাতিরজনক বংগবন্ধু/বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ তাজুদ্দিন আহমেদ একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই ১০ মিনিটের নির্দেশে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চাকুরী প্রদান করেছিলেন। ৭ দিন কি ৮ দিন পায়ে হেটে না খেয়ে মুজিবনগরে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম একটি স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নেশায়।
 এ নেশা সাড়ে সাত কোটি মানুষের রক্তে মাংসে অস্তিত্বে মগজে সেলের মত বিধেছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ "পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর হাত থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে হবে"
 জাতিরজনকের এই উদাত্ত আহবানে সারা দেয়া কী ভুল সিদ্ধান্ত ছিল? তাই আমি মুক্তিযোদ্ধা। নামবিহীন অস্তিত্ববিহীন মুক্তিযোদ্ধা! নাম বদলে দিলাম। মোঃ মোকতেল হোসেন থেকে নাম বদলে হয়ে গেলাম মোকতেল হোসেন মুক্তি।
পরবর্তীতে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু ১৩ই এপ্রিল ১৯৭২ সালে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হলে মাদারীপুরের কৃতি সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক খাদ্যমন্ত্রী প্রয়াত ফনি ভূষন মজুমদারের অনুস্বাক্ষরে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবীল থেকে এক হাজার টাকার অনুমোদন (মাদারীপুর মহকুমা প্রশাসক অফিসে) এবং ৩ বান ঢেউ টিন প্রদান করেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের রেকর্ডে একজন মুক্তিযোদ্ধার কোটায় আমার চাকুরী হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের সচিবালয়ে আমিই ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলাম। আমার ডিউটি ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার ফুফা, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি, সাবেক চীপ হুইপ আলহাজ্ব হাসনাত আব্দুল্লাহ সেরনিয়াবাত এর গর্বিত পিতা, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি ভাইয়ের শ্বশুর, সাংসদ ব্যারিষ্ঠার তাপসের নানা সাবেক কৃষক লীগের সভাপতি ভুমি মন্ত্রী ও পরবর্তীতে পানি সম্পদ মন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায়।
ইতিহাসের ঘৃণ্য কালো অধ্যায় ১৫ঈ আগস্টের মধ্যযূগীয় বর্বর হত্যাকান্ডের লাশ দেখে আমি পাগল হয়ে যাই। পিজি হাসপাতালে আমার ৩ মাস চিকিতসা চলে এবং সে তিন মাসের বেতন ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তন করে। এ কথা সকলেই জানেন।
আমি ভারতের প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। আমার ঘরের সব কাগজপত্র আমার ভাইদের শিক্ষার সনদ, জমির দলিল দস্তাফেজ সমূহ সব মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ছিড়ে ফেলি। আমার পরিবারের সব আমি ধংস করে ফেলেছিলাম। ভুমি মন্ত্রনালয় তার প্রমান।
আমি মন্ত্রীকে এসব কথা বলাতে আমাকে অপমান করতে পারেন না। আমি প্রবাসে থাকি। আমাকে আবেদনের সুযোগ না দিয়ে অপমান করার অধিকার মন্ত্রীর নাই। তিনি আমার দরখাস্ত গ্রহন করা ও না করার অধিকার রাখেন কিন্তু মেজর জেনারেল সুবিদ আলীর নির্দেশে  আমাকে অপমান করতে পারেন না। তিনি আমার আবেদনে লিখেছেন
“যেহেতু আবেদনকারী বহুবার দেশে এসেছিলেন এবং আবেদন করেন নি তাই তার আবেদন গ্রহন করা গেল না”
তিনি মেজর জেনারেল সুবিদ আলীর শিখানো কথা মত বললেনঃ ৪৫ বছর পরে মুক্তিযোদ্ধা হতে এসেছে। বের করে দেন”। 
আমি কেবল মুক্তিযোদ্ধাই নই, একজন সক্রিয় আওয়ামি যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আমার জীবনে অন্য কোন বিষয় কাজ করেনি এবং এ মুক্তিযুদ্ধ বংগবন্ধ ও আওয়ামী লীগই আমার ধ্যান ধারনা চিন্তা চেতনা আদর্শ এ কথা প্রমান করে আমার ৬০ হাজার প্রায় লীফলেটস, ব্যানার ও পোষ্টার এশিয়ায় ইন্টারনেট চালু হবার পর থেকেই কার বিনা প্ররোচনায় করে এসেছি। শুধু তাই নয় আমি ২০০ ওয়েব সাইট ও ব্লগ মেইনটেইন করি যা’শুধু যুদ্ধাপরাধী মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সংক্রান্ত। এ সকল ছবি ও ব্লগ/ওয়েবসাইটগুলোই প্রমান করে যে আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রীতিমত একজন বদ্ধ উন্মাদসম গবেষক।Just write my name on the google search engine where you’ll get real Identity of mine “write Moktel Hossain Mukthi or muktimusician.এ ছাড়াও আমি একজন একনিষ্ঠ অনলাইন আওয়ামী যোদ্ধা। মালদ্বীপের বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, মালদ্বীপের মাটিতে আমিই সর্ব প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু এবং পাকিস্তানের ৩০ লক্ষ বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য জনসভায় বক্তৃতা প্রদান করে পাকিস্তান হাই কমিশনের মামলা খাওয়া একজন মালদ্বীপ সরকারের শিক্ষক।  মন্ত্রী মহোদয় এ সব পরিচয় জানার পরেও বলেন নি যে আপনি বসেন বা কিছু বরং তাঁর আচার ব্যবহার এতই রুঢ় ছিল যা’ শিবির বা জামাতের কারো সাথে করছেন বলে অনুমেয়। আমার সাথে ভদ্র ভাষায় কথাও বলেন নি। এক পর্যায়ে জেনারেল সুবিদ আলীর কথায় তিনি আমাকে ঘাড় ধরে তাঁর কক্ষ থেকে বেড় করে দেয়ার কথা বলেন এবং অতঃপর.........।।
তিনি মন্ত্রী না হলে হয়তো সেখানেই কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতো। আমি আমার নিজেকে নিয়ন্ত্রন করে চলে আসি।
আমার সহযোদ্ধারা এখনো অনেকেই বেচে আছেন। ড: গোলাপ আমার সাথের একই ক্যাম্পের যোদ্ধা। আওয়ামি যোদ্ধা। 
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী সব সময় প্রচন্ড মিথ্যা কথা বলেন। যা' মিডিয়া ও বক্তৃতায় বলেন, বাস্তবের সাথে তার কোন মিল নেই; তিনি যা বলেন সব মিথ্যা কথা মিথ্যা তথ্য। এখনো বহু আসল মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত করতে পারেনি অথচ তিনি বক্তৃতায় ঘোষনা করলেন সকল জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের কথা রেকর্ড করা হবে। আসল অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামই সংগ্রহ করতে পারেন নি-তিনি কিভাবে এ ঘোষনা প্রদান করেন?
তার দেয়া সব তথ্য জাতিকে বিভক্ত করছে; মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কলঙ্কিত হচ্ছে। নতুন তালিকা প্রণয়নের নামে এগুলো প্রতারণা। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মিথ্যাচার করছেন। মিডিয়া, দেশবাসী এমন কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রতারণা করছেন । দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উপজেলা ও জেলাসমূহে যে দুর্নীতি চলছে, যে সনদ ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের নামে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের বিগত বছরগুলোর সকল সফলতা এমন কি মহান মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের যে অবদান সব মলিন হয়ে যাবে এই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীদের মত স্বজনপ্রীতি দুর্নীতি গ্রস্থ নেতা/কমান্ডারদের কারনে। কারন আপনি আদর্শিক কারনে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষন ও মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করছেন।  সমস্ত মন্ত্রী এম পি দের তৃনমূলের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। ক্ষমতা ও অর্থ সম্পদ শালী মধ্য শ্রেণীর নেতা যার মধ্যে অর্ধেকই প্রায় জামাত শিবির ও বি এন পি, তাদের সাথে তাল মিলিয়ে, হাত মিলিয়ে আমার মত পাগল ছাগল নিবেদিত ত্যাগি সৎ নিষ্ঠাবান অভিজ্ঞ উচিত কথাবলার প্রকৃত মুক্তিসেনাদের এভাবেই তারা অপমান তাচ্ছিল্য করে দূরে সরিয়ে রাখে। যে কারনে ছাত্রলীগের ছেলেদের সেনাবাহিনী নৌ বাহিনী বিমান বাহিনী পুলিশ বিজিবি ও অন্যান্য সরকারী ভালো পদে চাকুরী হয় না।
কারন ওরা ত টাকা দিতে পারবে না। দলীয় ছাত্র লীগের ছেলেদের নিকট টাকা চাইতেও পারে না; যদি আবার নেত্রীকে বলে দেয় বা জানিয়ে দেয়। তাই গোপনে আওয়ামী লীগের নেত্রীর বিশ্বাসী নেতাগন গোপনে চাকুরী প্রদান করে, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের ভর্তির সুপারিশ ও তদবীর করে জামাত বি এন পির ছেলে মেয়েদের । কারন টাকা পাওয়া যাবে।
 উত্তরা ও এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় আমার বাস। আমার জানা মতে ঠিক আমারই মত ত্যাগি জীবনবাজী রেখে নৌকার জন্য ভোট সংগ্রহ কারীর একটি মেয়েকে বঙ্গ মাতা স্কুলে ভর্তির জন্য কি না করেছে? মায়া ভাই পর্যন্ত বিষয়টি জানতেন। সে মেয়েটি সুযোগ পায়নি; দেখা গেছে-ঢাকা এয়ারপোর্ট ও বিমানে চাকুরীরত জামাত বি এন পির ছেলে মেয়েরা অজানা রহস্যের কারনে সবাই সুযোগ পেয়ে গিয়েছে।
 এর নাম স্বাধীনতা? মুক্তিযুদ্ধ? আওয়ামী লীগ?
 এত সে বঙ্গবন্ধুর নৌকা ডুবানোর দুরদন্ত শয়তানী মাঝি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চাষী মাহবুবুল আলম, নূরুল ইসলাম, কে এম ওবায়দুর রহমান তাহের উদ্দিন ঠাকুরদের চেয়ে একটূ কম নয়।
আমিই হলাম বাঙ্গালী জাতির মধ্যে সবচেয়ে কুলাঙ্গার। ধিক্রিত অবহেলিত লাঞ্ছিত মূর্খ বেয়াকুপ বেয়াক্কেল আহাম্মদ বোকা গাধা । না পারলাম প্রাণ খুলে হাসতে না পারলাম দুটি কন্যা সন্তানকে প্রাণ খুলে হাসতে। কি লাভ হল? এ স্বাধীনতায়? যে স্বাধীনতা আমার অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয় না; সে স্বাধীনতাকে আমি কেন স্বীকৃতি দেব? রাষ্ট্রই যদি আমাকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়, আমি কেন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবো? কেউ দেবে না। এটাই নিয়ম, এটাই লজিক। জানি আমি এতে হবো রাষ্ট্রদ্রোহী। তাও মন্দ কী? একটা কিছু ত হবো? আওয়ামী লীগের একজন মন্ত্রী একজন মুক্তিযোদ্ধাকে ঘাড় ধরে বেড় করে দেয়?? এ স্বাধীনতার অর্থ কী? কেন পেলাম? কি আশায় স্বাধীন হলাম? কিসের নেশায় নৌকা নৌকা মুজিব মুজিব করে জীবনের শেষ অবস্থানটুকুকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে নির্বাসিত হলাম এই দ্বীপ রাজ্য মালদ্বীপে । ভুল কোথায়? ভুল তো আছেই হয়তো জানিনা জীবনের কোথায় কোন সিদ্ধান্তে বড় রকমের ভুল ছিল। তাই ভুলের মাশুল দিয়ে গেলাম ৬৫ বছর বয়সের মুক্তিযোদ্ধা মোকতেল হোসেন মুক্তি।
ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এর সমাধান চাই। এর একটি পরিস্কার ব্যাখ্যা চাই; সত্যের জয় হবে; তাই চাই; জাতিরজনকের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ ক্ষমতায় থেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের নিয়ে রঙ তামাশা করবে; মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণের নামে ব্যবসা করবে, এর জন্য যুদ্ধে যাইনি, এর জন্য ৩০ লক্ষ বাঙ্গালী শহীদ হয়নি; এর জন্য ২ লক্ষ ৪০ হাজার মা বোনের ইজ্জত হারায়নি। আসল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাই করতে ব্যর্থ মোজাম্মেল হক।
এই মিথ্যাচারের জন্য আল্লাহ্‌ বিচার করবেন রোজ হাসরের দিন। মহান আল্লাহর বিচারে কারো হাত নেই। আল্লাহর উপরে কোন মন্ত্রী নেই; আল্লাহর উপরে বিচারক নেই; রোজ হাসরের থেকে শক্তিশালী ক্ষমতাবান কোন আদালত নেই। বহু আসল মুক্তিযোদ্ধা এখনো তালিকার বাইরে এবং এ সমস্যা আগামী ১০০ বছরেও কোন সরকার সমাধান করতে পারবে না। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কথা রেকর্ড হবে ।
মন্ত্রী নিজেও জানে না যে উপজেলা জেলা গুলোতে এই তালিকা নিয়ে কি পরিমান টাকার ছাড়াছড়ি চলছে? কি পরিমান ব্যবসা করছে নব্য থানা কমান্ডারগণ। এমন কোন উপজেলা নেই যেখানে সত্যকারের মুক্তিযোদ্ধা বাদ পড়ে নাই এবং ভূয়া মিথ্যা তথ্য প্রদানকারী মন্ত্রীর ক্ষমতা বলে নয়তো এম পির ক্ষমতা বলে অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতা বলে নতুন তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এমন প্রমান আমার গ্রামে আমার ইউনিয়নে রয়েছে। আমি ত অন্যের ক্কথা শূনে এ সব লিখিনি ভাই।ফুরিয়ে যাচ্ছে ৭১ এর সোনার ছেলে মেয়েরা, বেচে থাকবে শুধু ৭১ এ জন্ম নেয়া নব্য মুক্তিযোদ্ধারা, যারা লক্ষ টাকায় মুক্তিযুদ্ধের সনদ কিনে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। আমরা মুজিবনগরে (ভারতে) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এর চেয়ে বড় পরিচয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ ভারতের চাদপাড়া এবং পরবর্তীতে ব্যারাকপুর মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং আমরাও একই সময়ে একই শিবিরে একই কমান্ডারের অধীন প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপের নাম যদি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তালিকায় থাকতে পারে, তবে আমাদের নাম থাকবে না কেন? শুধু আমরা নই, সারা বাংলাদেশে বহু অখ্যাত অপরিচিত অশিক্ষিত অজো পাড়া গায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। বহু মুক্তিযোদ্ধা ইতোমধ্যেই পরলোকগমন করেছেন, কোন স্বীকৃতি ও সুযোগ সুবিধা ভোগ না করেই তারা চলে গেছেন বাঙ্গালী জাতিকে মহান স্বাধীনতা প্রদান করে। তাদের নাম কে তালিকাভুক্ত করবে? কেন একটি সঠিক তদন্ত কমিটি কর্তৃক সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়নি? এ প্রশ্ন সরকার ও দেশবাসীর কাছে। আমরা মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধের নেত্রিত্বদানকারী দল হিসেবে জাতিরজনক বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের এ মহান দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের জীবদ্ধশায় সম্পন্ন করা উচিত। সবাই শেয়ার করুন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সত্যিকারে শ্রদ্ধা থাকে।
 আমার সার্টিফিকেট দরকার নাই। কোন ভাতার দরকার নাই। আপনি মুসলমান দাবী করলে আমি কেন করবো না? আমিওত নামাজ পড়ি? মন্ত্রী আমাকে অপমান করতে পারে না। তার চেয়ে আওয়ামী লীগের জন্য আমার অবদান সেই ৬৯ থেকে অদ্যাবধি তিল পরিমান কম নয়; বঙ্গবন্ধু আমাকে চাকুরী দিয়েছিলেন সচিবালয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। অমুক্তিযোদ্ধা ভাতা পায় এবং তা আওয়ামী লীগের আমলে এবং আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর স্বাক্ষরে কেন? আমার কি ইচ্ছে করে না যে আমার সন্তান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোক। আমার সন্তানের কি ইচ্ছে করে না, তার বাবা মুক্কতিযোদ্ধা এ কথা অন্য দশজনের নিকট বলে গৌরব বোধ করতে? মন্ত্রীর ইচ্ছে মত চলতে পারে না; এ সব তথ্য নেত্রীর জানা দরকার। দেশ আজ কোন পথে যাচ্ছে? শেখ হাসিনা কি করতে চাচ্ছেন? আর তার সাঙ্গ পাংগ মন্ত্রী আমলারা কি করছনে? আওয়ামী লীগ কে এরাই ডুবায় আর বাংলার নিরিহ মানুষ খেসারত দেয়। আমার মাদারীপুরের আমার সহযোদ্ধা ভারতে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধারা কেন তালিকায় এলো না? মন্ত্রী শাহজাহান খান সভাপতি, সেখানেও দেখলাম সব মিথ্যাচার সব ভন্ডামী ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে তিনি হেসে হেসে গল্প করছেন আর কাগজ স্বাক্ষর করছেন। যারা ৭১ সালে জুন মাসে আমাদের লেফট রাইট দেখে পিটি প্যারেড দেখে টিটিকিরি দিয়েছে, তারা এসেছে মুক্তিযোদ্ধা দাবী করতে এবং মন্ত্রী স্বাক্ষর করে দিলেন? দীদার ভাই@ আল্লাহ্‌র কছম, আমার সন্তান যদি আমাকে বাবা না বলে আমি সন্তান বলবো না, আমার পিতা মাতা আমাকে সন্তান হিসেবে স্বীকার না করলে আমিও করবো না। মহান স্বাধীনতা যদি আমাকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি প্রদান না করে আমি কেন স্বাধীনতাকে মেনে নেবো? দেশ স্বাধীন করেছি আমরা, ফসল খাবে নবাগতরা; যে সংজ্ঞা আপনি একজন মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন, সেটা আপনার ব্যাপার। আমি মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি; আমি বিজয়কে স্বাধীনতাকে মেনে নিয়েছি স্বীকার করেছি; আপনি স্বাধীনতা; আপনাকেও মেনে নিতে হবে আমি মুক্তিযোদ্ধা। নইলে ত দেশ স্বাধীনই হয়নি। স্বাধীনতা যদি আমাকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকার না করে, আমি কেন স্বাধীনতাকে স্বীকার করবো? আমার অনেক কষ্ট অনেক দুঃখ । সে ১৫ই আগষ্ট থেকে দাউ দাউ করে জ্বলছি। কেউ জানেন না। নেত্রী কিছুটা জানেন। আমি মন্ত্রীকে দেখাবো, তিনি কি করবেন? ক্রস ফায়ার দেবেন, তাতে আমি আরো বিখ্যাত হব; বিশ্ব জানবে শেখ হাসিনার সরকারের উগ্র মেজাজী রগচটা মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাকে ক্রস ফায়ার দিয়ে মেরেছে। আমার সন্তানেরা আমার লাশ নিয়ে মিছিল করবে; আমি হব আরো জনপ্রিয়। এর পরেও আওয়ামী লীগ করি; কারন ওটা রক্তে অস্তি মজ্বজায় মিশে গেছে।
আজ যারা কালকিনিতে কমান্ডার বলে খ্যাত, এদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা নয়; এমন কি আমার ইউনিয়ন বাশগাড়ীর সকল মুক্তিযোদ্ধাদের আমার চেয়ে ত অন্য কেউ বেশী চিনে না, জানে না; এমন কি বাছাই কমিটির সভাপতি নৌ মন্ত্রী মোঃ শাহজাহান খানও তাদের চিনেন না। বিগত ১৮ই ফেব্রুয়ারী কালিকিনিতে বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই হল। আসল মুক্তিযোদ্ধারা এমন কি ব্যারাকপুর মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ কালীন কমান্ডার হানিফ মাহমুদ ( নিউজিল্যান্ড প্রবাসী ) এর নামও তালিকায় নেই যিনি চাদপাড়া রিসিপশন ক্যাম্পের সহকারী ইনুচারজ ছিলেন। হায়দার বেপারী যিনি স্বাধিনতাত্তোর বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এবং ৭১ সালে চাদপাড়া ক্যাম্পের ইনচারজ মাদারীপুর কালকিনি ৩ আসনের প্রথম এম পি (এম সি এ) বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এডঃ মতিউর রহমান (মতিভাই) র সাথে তার বাসায় থাকতেন এবং ক্যাম্প অফিসের কাজ করতেন। তার দরখাস্তও মাননীয় মন্ত্রী গ্রহন করেন নি;
বড় কষ্ট পেয়েছি; যারা মুক্তিযোদ্ধা নয়; তাদের সাথে মন্ত্রী মহোদয় হেসে কথা বললেন-গল্প করলেন, তাদের কাগজপত্র স্বাক্ষর করলেন আর যে আসল মুক্তিযোদ্ধা তাকে ফিরিয়ে দিলেন; সে কাদতে কাদতে ফিরে গেল; এ দুঃখজনক ঘটনা বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খানের দ্বারা সংঘটিত হওয়ায় অবাক বিশ্বয়ে তাকিয়ে ছিলাম এবং লাল বই তে আমার নাম না থাকা সত্বেও আমি কথা বলেছিলাম। ওদের সমর্থন করেছিলাম।
মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিশেষ করে যারা বঙ্গবন্ধুর অবদানকে অস্বীকার করেছে এবং এখনো করছে, তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা পাবে, তাও আবার আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাকালীন এবং আপনার মত মাদারীপুর কাপানো আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর সামান্য ভুলের কারনে? এটা ঠিক কিনা? আপনি নিজেই অনুধাবন করুন। আমরা আপনার সুবিবেচনা সুবিচারের প্রত্যাশায় অধির আগ্রহে বসে থাকলাম।
তাছাড়া আঞ্চলিক সমস্যা গুলো আপনি সরাসরি না জেনে কিভাবে সমাধান করবেন? এ মহৎ কাজটি আপনার দ্বারাই সম্পন্ন করতে হবে। সে কারনে বর্তমান বাছাই পদ্ধতি সংস্কার করে পরিবর্তন করে সম্পন্ন করতে হবে। 
ভারতে প্রশিক্ষন নেয়া আমার সহযোদ্ধা অনেকেই আর বেচে নেই; তাদের পরিবার বঞ্চিত হল মহান স্বাধীনতার ফসল থেকে। এ কাজ যারা করেছে, তারা তাদের ইচ্ছে মত অর্থ নিয়ে ৭১ এর স্বাধীনতা বিরোধীদের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় লিখে দিয়েছে। যে সমস্যা মাদারীপুরের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের কলুষিত করছে, সে সমস্যা কেন্দ্রীয়ভাবে সমাধান হবার নয়; যার যার জেলা উপজেলায়ই সমাধানযোগ্য।
আমার মুক্তিযোদ্ধা হবার সখ নেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ঐ আসল মুক্তিযোদ্ধা হতভাগাদের কি হবে? যারা ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের নাম মূখে আনেনি, তারা ভাতা পাচ্ছে, তাদের সংসার ভালো চলছে আর যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গেল, যুদ্ধ করলো তাদের নাম নেই; এ কলঙ্ক এ ব্যর্থতা যে কোন ভাবেই হোক আওয়ামী লীগ সরকারের এবং  আপনার উপরই বর্তায় কারন আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেছিল।
আপনি আমাদের শেষ ।মহান আল্লাহ্‌ যেনো আপনার দ্বারা কোন ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহনের কলঙ্ক লেপন না করে। আল্লাহ্‌ আপনাকে সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের চিনহিতকরনে সহযোগিতা করুক।
আমরা মুজিবনগরে (ভারতে) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এর চেয়ে বড় পরিচয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার বিশেষ সহকারী ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপ ভারতের চাদপাড়া এবং পরবর্তীতে ব্যারাকপুর মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা এবং আমরাও একই সময়ে একই শিবিরে একই কমান্ডারের অধীন প্রশিক্ষণ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা। ডঃ আব্দুস সোবহান গোলাপের নাম যদি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তালিকায় থাকতে পারে, তবে আমাদের নাম থাকবে না কেন?
শুধু আমরা নই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সারা বাংলাদেশে বহু অখ্যাত অপরিচিত অশিক্ষিত অজো পাড়া গায়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। বহু মুক্তিযোদ্ধা ইতোমধ্যেই পরলোকগমন করেছেন, কোন স্বীকৃতি ও সুযোগ সুবিধা ভোগ না করেই তারা চলে গেছেন বাঙ্গালী জাতিকে মহান স্বাধীনতা প্রদান করে। তাদের নাম কে তালিকাভুক্ত করবে? কেন একটি সঠিক তদন্ত কমিটি কর্তৃক সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হয়নি? এ প্রশ্ন আমরা কাকে করবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?  আমরা মনে করি মহান মুক্তিযুদ্ধের নেত্রিত্বদানকারী দল হিসেবে জাতিরজনক বংগবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের এ মহান দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধাদের জীবদ্ধশায় সম্পন্ন করা উচিত।
আমার লজ্জা করে কাউকে বলতে যে আমাকে মন্ত্রী অপমান করেছে, তোমরা বিচার কর। তাই অনলাইনেই বিচার চাই। মোজাম্মেল আমাকে গায় হাত দেয়নি; মানসিক ভাবে প্রচন্ড আঘাত করেছে, যা'কোটি টাকায় শোধ হবে না; যা' রোজ কিয়ামতের আগ পর্যন্ত আমার অন্তর থেকে মুছবে না। সমাজ সংসার বন্ধু বান্ধব আত্মীয় পরিজন সবাই নিষেধ করছে=মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু না লেখার জন্য; ৭১ সালেও ত আমার মা মুক্তিযুদ্ধের নামে কোথায় গিয়ে মারা যাবো, তাই যাবার জন্য উন্মাদ হয়ে এখানে ওখানে ছটোছুটি করা দেখেই মা'বুঝেছিল, ছেলে আমার ভারতে যাবার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে; সেই মায়ের নিষেধ অমান্য করে যখন ভারত যেতে পেরেছি; তখন মায়ের উপরে ত আর কোন আত্মীয় হয় না?
 তাই আপনার দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ অপমান করলে আপনি জাতিকে কথা দিয়েছেন; প্রতিবাদীদের সাথে আপনি আছেন। আমি আমার এ সংগ্রামে আপনার সমর্থন চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
ঘরের ইঁদুর বাধ কাটলে বাঁধ দিয়ে হয়রান হয়ে যাবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী;
আ ক ম মোজাম্মেল হক কে মন্ত্রী পরিষদ থেকে বরখাস্ত করে জাতিরজনক, মুক্তিযুদ্ধ ও মহান স্বাধীনতার গৌরবকে অক্ষুন্ন রাখুন; আপনার সমস্ত সফলতা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের ব্যর্থতার কালিমায় মলিন হয়ে যাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি মুক্তিযোদ্ধা হতে চাইনা কিন্তু আমার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবী জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; ওরা গরীব-আমি ইনশাহ আল্লাহ্‌ গরীব নই; অনেক ধন সম্পদ নাম যশ যত সামান্য হলেও আমার দুইবেলা দুই মুঠো ভাত জোটে। কিন্তু নিভৃত পল্লীর অশিক্ষিত হত দরিদ্র্য মুজিব নগরের মুক্তিযোদ্ধা-ওরা মাসের ১০ হাজার টাকা ভাতা পেলে ওদের জীবন কত সুখের হতে পারে মাননীয় প্রধানমন্ত্র
যাদের অর্থ আছে, তারাই কমান্ডারদে কিনে নেয়; নেতা নেত্রীদের বাসায় বড় ধরনের উপঢৌকন পাঠায়, তাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়ে যায়;
এ দুর্নীতি এ স্বজনপ্রীতি মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য, জাতিরজনকের জন্য আপনার জন্য সর্বোপরি সকল মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের জন্য কলঙ্কিত অধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। 
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি ভাবিনা এত কিছু একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখবার পরে আমার কি হবে? ১৫ই আগষ্টের চেয়ে ভয়াবহ আর কিছুই হতে পারে না; যে আগষ্ট আমার চোখে দেখা। এতিম কচি খোকার মত ১৫ই আগষ্ট ঢাকার রাজপথে ঘুরে ঘুরে দেখেছি লাশের সমাহার; বদ্ধ পাগল হয়ে তিন মাস জেল খেটেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী;
তেজগাও থানার এস আই জাতিরজনক কে গালি দেয়ায় গভীর রাতে এফ ডি সি'র সমূখের রেললাইনে পিটিয়ে ১৪ দিন জেল খেটেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আমার হারাবার কিছু নেই; যেমন নেই আপনার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মোহিত আমার একান্ত ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও বন্ধু ছিল। ১৫ই আগষ্ট রাতে ৩২ নং বাড়ীতে কর্মরত শহীদ এস আই সিদ্দিকুর রহমান আমাদের কোলকাতায় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষন দিয়েছিলেন। শুনেছি, তাঁর নামও নাকি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নেই।
সত্য কথা অনেক সময় মহা সংকট ও বিপদ ডেকে আনে, এ লজিক আমিও জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আমি আ ক ম মোজাম্মেল হক এর পদত্যাগ চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী;
এর জন্য ইন্টারনেটের কোন বিভাগ আমি বাকী রাখবো না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আপনার দৃষ্টিতে আমার এ আবেদন কোন না কোন ভাবে পৌছাবেই।

http://narrowpolitics.blogspot.com/
 http://mukthizcreation.wordpress.com/
http://bdawamileague.wordpress.com/
 http://creationofmukthi.blogspot.com
 http://misrulesofbnpjamat.wordpress.com/
 http://sheikhhasina.blog.com/
 http://skhasinawajed.blogspot.com
 http://deshratna.weebly.com
 http://bangladeshstudentleague.blog.com/
 http://daughterofthedemocracy.blogspot.com
 http://bangabandhuporisadmv.blogspot.com
 http://thegreatestbangalee.blogspot.com
 http://theburningnation.weebly.com/
 http://jathirpitha.wordpress.com
 http://skmujiburrahman.blogspot.com
 http://bangabandhu.weebly.com
 http://bangabandhuporisad.webs.com/
 http://bangabandhu.webs.com
 http://august75tragedy.blogspot.com
 http://thefatherofnation.blogspot.com
 http://mujibshena.blogspot.com
 http://bangladeshawamileague.webs.com
 http://worldawamileague.blogspot.com
 http://charterofchange.blogspot.com/
 http://charterofchange2021.blogspot.com/
 http://digitalbangladesh.blog.com
 http://mukthi.tumblr.com/archive
 http://mukthi.tumblr.com/muktimusician
 http://thefutureleaderjoy.wordpress.com/
 http://thefutureleader.webnode.com
 http://jajaborpakhi.blog.com/
 http://moktelhossainmukthi.blog.com
 http://muktimusician.blog.co.in
 http://muktirpata.blogspot.com
 http://muthirpachali.blogspot.com
 http://mukthimadaripuri.blog.co.in
 http://amarmonmanena.webs.com/
 http://mukthi.webnode.com/
 http://muktirpata.weebly.com/
 http://khasherhat.blogspot.com
 http://amramujibshena.blog.com/
 http://muktimusician.blog.com
 http://muktimusician.stumbleupon.com/
 http://muktimadaripuri.blogspot.com
 http://muktimusician.blogspot.com
 http://mukthircollection.blogspot.com
 http://muktimusician.photobucket.com/
 http://muktimusician.wordpress.com
 http://mukthircollection.blogspot.com
 http://moktelhossainmukthi.blogspot.com
 http://freedomfighters71.blogspot.com
 http://misrulesofbnpjamat.blogspot.com
 http://warcrime1971.blogspot.com
 http://khaledaziaandrazakars.wordpress.com
মোকতেল হোসেন মুক্তি
কন্ঠশিল্পী মুক্তিযোদ্ধা
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
সময়৭১
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ
বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মালদ্বীপ শাখা
সাধারণ সম্পাদক
মালদ্বীপস্থ প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি এসোসিয়েশন
সুরকার গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক
সঙ্গীত শিক্ষক
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ।  

Saturday, May 28, 2016

শেখ হাসিনার বৈশ্বিক নেতৃত্ব বিশ্বশান্তি ও উন্নয়ন প্রসঙ্গ ‘দেশ ও বিশ্বপরিমন্ডলে শেখ হাসিনা


বিশ্বশান্তি ও উন্নয়ন প্রসঙ্গ
‘দেশ ও বিশ্বপরিম-লে শেখ হাসিনা আজ গণতন্ত্র, উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও শান্তির প্রতীক। তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘে অনেকগুলো প্রস্তাব আনে, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ, টেকসই উন্নয়ন এবং সকল জাতিসত্তার অব্যাহত উন্নয়ন ও মুক্তি।’



ড. আব্দুল মোমেন: 

প্রাণঘাতী যুদ্ধ-বিগ্রহ আর অযুত মানুষের হত্যাযজ্ঞের ওপর দাঁড়িয়ে শান্তির অন্বেষায় ১৯৪৫ সালে যে বিশ্ব সংস্থাটির জন্ম, সেই জাতিসংঘ পরিপূর্ণারূপে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সফল হয়েছে কি-না তা এখনও বিশ্বজুড়ে একটি আলোচ্য বিষয়। তবুও সাবেক মহাসচিব দ্যাগ হ্যামার্শ্যল্ড-এর ভাষায় বলতে হয়, ‘জাতিসংঘ আমাদের স্বর্গে নিতে না পারলেও নরক থেকে দূরে রাখতে সমর্থ হয়েছে।’ পৃথিবীর নানা অঞ্চলের সংঘাতপূর্ণ বিষয় ও সমস্যার ওপর আলোচনা, বিতর্ক ও সংলাপ যেমন জাতিসংঘ আয়োজন করে চলেছে, তেমনি সংস্থাটি অন্তত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এই পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখতে সমর্থ হয়েছেÑ এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। আশার কথা হচ্ছে,
এই যে জাতিসংঘের নিরলস প্রয়াসের কারণেই আজ পৃথিবীতে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, প্রসূতি মায়েরা অধিক হারে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিচ্ছে, লাখ লাখ শিশু স্কুলে যাচ্ছে এবং কোটি কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধার ভয়াল চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। তবে এই অর্জন সম্ভব হতো না, যদি বৈশ্বিক নেতৃত্বের গতিশীলতা, দৃঢ়সংকল্প ও প্রয়াস না থাকতÑ যারা স্ব-স্ব দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে ইস্পাত কঠিন সংকল্প নিয়ে কাজ করেছেন এবং এখনও করে চলেছেন। তেমনি এক নেতৃত্ব জাতিসংঘের স্বীকৃৃতিসহ সারা পৃথিবীতে সুশাসনের জন্য নিজের দেশের সম্মান ও গৌরব বৃদ্ধি করেছেন। নিজের দেশসহ সারা পৃথিবীতেই নিরাপত্তা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্তি এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য এই নেতৃত্ব বিশ্বসভায় অগ্রসর অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। সেই নেতৃত্ব আর কেউ নন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লেও আজ ন্যায় ও সুশাসন এবং উন্নয়নের প্রতীক বলে খোদ জাতিসংঘই বলছে বাংলাদেশ ও দেশটির নেতা শেখ হাসিনার কথা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন সুশাসন ও মানবতার প্রতি বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনার এই সংকল্প? কেন তিনি নিজের দেশের মানুষ এবং বিশ্বের জন্য দারিদ্র্য দূরীকরণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত? কেন তিনি বৈষম্যহীন এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি ‘সোনার বাংলা’ গঠনের স্বপ্নে বিভোর? কেন তিনি জাতিসংঘের নেতৃত্বে বিশ্বে সন্ত্রাস ও ধর্মীয় উগ্রবাদমুক্ত পৃথিবী উপহার দিতে প্রয়াসী? কেন তিনি নিজের দেশ এবং পৃথিবীর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় এতটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ? জাতি, লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ এবং দেশের সীমারেখা নির্বিশেষে কেন তিনি একটি সহনশীল ও নিরাপদ বিশ্ব গঠনে জাতিসংঘকে
অকুণ্ঠ সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছেন? কেন দৃঢ়ভাবে জাতিসংঘ সনদের আলোকে আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং বহুমাত্রিক কূটনৈতিক তৎপরতার প্রতি এতটা আস্থাশীল হয়ে বৈশ্বিক শান্তির পতাকা বয়ে বেড়াতে তিনি সদা তৎপর? এ প্রশ্নগুলো গভীরভাবে ভেবে দেখার অবকাশ রয়েছে।
শেখ হাসিনা এমন একটি সমাজের মানুষ যেখানে সুদূর অতীত থেকেই, ১৪৯২ সালে কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার বা ষোড়শ শতাব্দীর ইউরোপীয় শিল্প বিপ্লবেরও আগে, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ছিল। কবি চ-ীদাসের ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’, কিংবা কাজী নজরুল ইসলামের ‘গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান’Ñ এসব লেখায় আমরা সেই ইতিহাসের সাক্ষ্য পাই। চ-ীদাসের এ দর্শনতত্ত্ব বাঙালির মনন ও মানসের এতটাই গভীরে প্রোথিত যে তা শতাব্দীর পর শতাব্দী উচ্চারিত হয়েছে। মানবতাই সবার ঊর্ধ্বেÑ তেমনি এক আলোকিত পরিম-ল থেকে উঠে এসেছেন শেখ হাসিনা। তিনি এমন এক পরিবার থেকে এসেছেন, দেশ ও মানবতার জন্য আত্মত্যাগ যাদের অপরিসীম। তার পিতা সারাটা জীবন অতিবাহিত করে গেছেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য যাকে জেল খাটতে হয়েছে জীবনের দীর্ঘ সময়। তিনি চেয়েছিলেন একটি শোষণমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র যেখানে সকলের জন্য সমানাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। তার স্বপ্ন ছিল এমন একটি দেশ যার মূল ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং জননিরাপত্তা; যেখানে থাকবে না ক্ষুধা-দারিদ্র্য, শোষণ এবং অবিচার। এহেন একটি শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের প্রত্যয়ে যখন বঙ্গবন্ধু আত্মনিয়োগ করেছেন তার সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশে, ঠিক তখনই ১৯৭৫ সালে তাকে সপরিবারে হত্যা করে পরাজিত পাকিস্তানিদের দোসর এদেশীয় ঘাতকচক্র। ওই ভয়াল হত্যাকা-ে শেখ হাসিনা কেবল তার পিতাকেই নয়, হারান পরিবারের প্রায় সব সদস্যকে; এমনকি তার ৯ বছরের ছোট্ট শিশু ভাইকেও রেহাই দেয়নি খুনিরা। শুধু তিনি নিজে এবং তার ছোট বোন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
মানুষের জন্য শেখ হাসিনার জীবনসংগ্রাম এখানেই শেষ নয়, তিনি এ পর্যন্ত ২৩ বার প্রাণঘাতী হামলার শিকার হয়েছেন। প্রতিটি হামলার ক্ষেত্রেই তার প্রিয় রাজনৈতিক সহকর্মীদের অনেকেই নিহত বা আহত হয়েছেন; নয় তো পঙ্গুত্ববরণ
করেছেন। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে, প্রিয় সহযোদ্ধাদের হারিয়েও শেখ হাসিনা দমে যাননি। তার লড়াই-সংগ্রাম চলছে। সারাবিশ্বে আর কোনো দেশে এমন একজন নেতা খুঁজে পাওয়া যাবে না যিনি নিজের সর্বস্ব হারিয়েও দেশের আপামর জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার এবং একটি উন্নত-সুন্দর জীবন প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি নিয়ত সংগ্রাম করে চলেছেন। দেশে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষাসহ সকল মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবিচল থেকে তিনি কাজ করে চলেছেন নিরন্তর।
এতে সন্দেহের কোনো অবকাশই নেই যে দেশ ও বিশ্বপরিম-লে শেখ হাসিনা আজ গণতন্ত্র, উন্নয়ন, ন্যায়বিচার ও শান্তির প্রতীক। তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘে অনেকগুলো প্রস্তাব আনে, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ, টেকসই উন্নয়ন এবং সকল জাতিসত্তার অব্যাহত উন্নয়ন ও মুক্তি। উদাহরণস্বরূপ, তারই নেতৃত্বে ও তারই আনীত প্রস্তাবের কারণে জাতিসংঘে আজ ‘উন্নয়নের অধিকার’ একটি মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশের সভাপতিত্বে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ১৩২৫ নম্বর প্রস্তাবের কল্যাণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণের প্রতিটি পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনার কল্যাণেই আজ জাতিসংঘে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বা ‘ঈঁষঃঁৎব ড়ভ চবধপব’ চালু হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী জোরালভাবে অনুসৃত হচ্ছে।
কেন এই শান্তির সংস্কৃতি এতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক? এর মূলনীতি হচ্ছে এমন একটি আবহ সৃষ্টি করা যার মাধ্যমে পরমত সহিষ্ণুতা এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত করা যায়Ñ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, ভাষা এবং নৃ-গোষ্ঠীগত পরিচয় নির্বিশেষে। কেননা, শান্তির সংস্কৃতি বিশ্বাস করে যে, অসহিষ্ণুতা এবং ঘৃণা থেকেই সর্বপ্রকার বিরোধ, সহিংসতা ও যুদ্ধের উৎপত্তি। তাই সকলের মাঝে যদি পারস্পরিক সহিষ্ণুতা এবং শ্রদ্ধাবোধ সৃজন করা যায়, তা হলেই আমরা যুদ্ধহীন ও সংঘাতমুক্ত এক পৃথিবী গড়তে পারব। তা হলেই সম্ভব হবে স্থায়ী উন্নতি, সমৃদ্ধি ও শান্তি অর্জনÑ জাতিসংঘের মূল লক্ষ্যও তাই। আশার কথা এই যে বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনা অনুসৃত শান্তির সংস্কৃতি আজ বিশ্বজুড়ে, সকল জাতির মাঝেই ব্যাপকভাবে অনুভূত হচ্ছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ আজ সর্বোচ্চ সৈন্যদাতা রাষ্ট্র। যুদ্ধ আক্রান্ত রাষ্ট্রে যাতে সাধারণ মানুষ এবং শান্তিরক্ষীরা সুরক্ষিত থাকে সে বিষয়ে শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকর। বিশ্বে তিনিই একমাত্র নেতা যিনি এমনকি বড়দিনের ছুটির মাঝেও জাতিসংঘ মহাসচিবের অনুরোধে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শান্তিরক্ষী প্রেরণের নির্দেশনা দিয়েছেন। শান্তিরক্ষী প্রেরণে তিনি কখনোই কার্পণ্য করেননি। এটি কোনো বিস্ময়ের ব্যাপার নয় যে ১ লাখ ৩৮ হাজার শান্তিরক্ষী বাহিনীর সমন্বয়ে জাতিসংঘ সারা পৃথিবীতে শান্তি রক্ষা করতে সমর্থ হচ্ছে যেসব সৈন্যের অনেকেই তাদের জীবনের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। তারা প্রকৃত অর্থেই শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারের দাবিদার।
শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘে দুটি যুগান্তকারী প্রস্তাব আনে ২০১২ সালে, যা সর্বসম্মতিক্রমে বিশ্বসভায় গৃহীত হয়। এর প্রথমটি ছিল অটিজম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকার সংক্রান্ত, আর দ্বিতীয়টি জনগণের ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত। তিনি বিশ্বাস করেন, সবারই অংশগ্রহণের সমান সুযোগ রয়েছে, কারোরই বাদ পড়ার কথা নয়। মানবতা ও উন্নয়নে সবাই নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী অবদান রাখতে পারে। তাই অটিজমে আক্রান্ত এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের জীবন যন্ত্রণা ও বঞ্চনার বিষয়টি যখন তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন উত্থাপন করেন, বাংলাদেশ দ্রুত এ বিষয়টি বিশ্বসভায় উত্থাপন করে এবং বিশ্বনেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সমর্থন আদায় করে।
অটিজম এবং প্রতিবন্ধিতা সংক্রান্ত অনেকগুলো বড় বড় সভা আহ্বান করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ এবং তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সামনে বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ার পরপরই মহাসচিব তা সাধারণ পরিষদে সেগুলো প্রস্তাবিত ও অনুমোদিত হয় এবং সদস্য রাষ্ট্রসহ সবকটি জাতিসংঘ সংস্থার কর্মকা-ে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক নেতৃত্বটি অবশ্যই বাংলাদেশের এবং দেশটির নেতা শেখ হাসিনার।
বিগত ৪০ বছরের জাতীয় ও বৈশ্বিক
রাজনীতির অভিজ্ঞতা থেকে শেখ হাসিনা জানেন যে সামনের দিনগুলোতে বিশ্বের প্রধানতম চ্যালেঞ্জগুলো হবে জলবায়ু পরিবর্তন, বেকারত্ব, আর্থিক সংকট, দীর্ঘস্থায়ী ক্ষুধা ও দারিদ্র্য এবং এগুলো থেকে উদ্ভূত হাজারও সমস্যা। তাই তিনি বিশ্বাস করেন এই চ্যালেঞ্জগুলো তখনই মানুষ অতিক্রম করতে সক্ষম হবে যখন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যাবে। একেই তিনি বলছেন জনগণের ক্ষমতায়ন। এটি সম্ভব হলে সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী শক্তি, সক্ষমতা এবং কার্যকরিতার সাথে মানুষ কাজ করতে পারবে, ফলে সবাই সমভাবে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে পারবে। তাই জনগণের ক্ষমতায়নের প্রতি তিনি এতটা গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে জনগণকে ক্ষমতায়িত করা যাবে? বিষয়টিকে তিনি ৬টি আন্তঃসংযুক্ত চলকের দ্বারা বিশ্লেষণ করেছেনÑ প্রথমত; মানুষের ক্ষমতায়ন হবে চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্তি সম্ভব হলে, দ্বিতীয়ত; তাদের ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, কারিগরি জ্ঞান ও মানসম্মত শিক্ষাদানের মাধ্যমে যাতে করে তারা নিজেরাই কর্মসংস্থান বা উপযুক্ত চাকরির ব্যবস্থা করে স্বাবলম্বী হবে, তৃতীয়ত; তাদের ক্ষমতায়ন সম্ভব হতে পারে বৈষম্য ও বঞ্চনার অবসানের মাধ্যমে, চতুর্থত; সন্ত্রাস নির্মূল করে একটি নিরাপদ জীবন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করা যাবে, পঞ্চমত; এতদিন যারা উন্নয়ন ও মূল জীবনধারার বাইরে ছিল, তাদের অন্তর্ভুক্ত করে ক্ষমতায়ন করা যাবে এবং সর্বোপরি, তাদের ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে ভোটাধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে ও শাসন ব্যবস্থায় সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে।
শেখ হাসিনার ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ ধারণাটি জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনসসহ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের নেতৃবৃন্দের মধ্যেও অনুরণিত হয়েছে। ২০১২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত ‘রিও+২০ বিশ্ব সম্মেলনে’ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ‘যেমন ভবিষ্যৎ চাই’ শীর্ষক দলিল গ্রহণ করেন যার মধ্যে শেখ হাসিনা প্রণীত জনগণের ক্ষমতায়ন নীতিমালা এবং তার সাথে জড়িত আদর্শ অনুসৃত হয়। উক্ত সম্মেলনে দারিদ্র্য দূরীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়, যার মূল ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে সকলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত স্থিতিশীলতা অর্জন। সম্প্রতি জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত প্রস্তাব যা, ‘20130 Agenda for Sustainable WorldÕ বা ÔSDGs’ নামে পরিচিত সেটির মূল ভিত্তিই ছিল রিও+২০ তে অনুসৃত শেখ হাসিনার জনগণের ক্ষমতায়ন তত্ত্ব। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা জাতিসংঘে গ্রহণ করেন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, যার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের যথার্থভাবেই শেখ হাসিনা প্রণীত জনগণের ক্ষমতায়ন নীতিমালার আলোকে সবার অন্তর্ভুক্তি, মানসম্মত শিক্ষা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, দারিদ্র্য দূরীকরণ, জনগণের অংশগ্রহণ, আইনের শাসন, সুশাসন ইত্যাদি নির্ধারিত হয়।
তার গতিশীল নেতৃত্বে জাতিসংঘে বাংলাদেশ কর্তৃক উত্থাপিত প্রতিটি বিষয়ই এসডিজি-র ১৭টি লক্ষ্য এবং ১৬৯টি উদ্দেশের মাঝে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ খাদ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, শিল্পায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, অভিবাসন ও উন্নয়ন, মানসম্মত শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ-সমতা, শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার, জলসম্পদের আন্তঃদেশীয় ব্যবস্থাপনা, জীববৈচিত্র্য, নীল অর্থনীতি (সাগর ও মহাসাগর), বিশ্ব আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অধিকতর অংশগ্রহণের সুযোগ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন, পারস্পরিক সহযোগিতা, এলডিসি ইস্যু ইত্যাদি।
জাতিসংঘের সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে অবিস্মরণীয় অগ্রগতি, তা মূলত সম্ভব হয়েছে দেশটির নেতা শেখ হাসিনার উন্নয়ন চিন্তা এবং জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে তার অবিচল প্রতিজ্ঞার কারণেই। সম্পদের ব্যাপক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও কেবল নেতৃত্বের বিচক্ষণতা, দৃঢ়তা এবং সঠিক দিক-নির্দেশনার কারণেই বাংলাদেশ এই লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এককালে যে দেশকে বলা হয়েছিল ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ (Bottomless Basket), যার ‘সফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই’ বিশ্ব মোড়লেরা দেখেনি, সেই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আজ ৬.৩ শতাংশ, তাও আবার এক নাগাড়ে সাত বছর ধরে। চরম দারিদ্র্য ১৯৯১ সালে যেখানে ছিল ৫৭.৮ শতাংশ, ২০১৫ সালে তা কমে এসেছে ২২.৪ শতাংশেরও নিচে। একই সাথে নবজাত শিশু মৃত্যুর হার ৭৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে পেরেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের সর্বাধিক জনঅধ্যুষিত ও স্বল্প আয়তনের এক দেশের জন্য এই সাফল্য একেবারে কম নয়। আর এই অর্জন সম্ভব হয়েছে কেবল শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই।
দেশের অভ্যন্তরে ব্যাপক বিরোধিতা এবং নানান প্রতিবন্ধকতার মধ্যও শেখ হাসিনা তার দৃঢ় ও আপসহীন সিদ্ধান্তের দ্বারা দেশকে উন্নয়নের পথে যেভাবে পরিচালিত করেছেন, তার কল্যাণেই বাংলাদেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, অথচ পূর্বে দীর্ঘ সময় ধরে দেশটি ছিল খাদ্য ঘাটতির মধ্যে। এই ব্যাপক পরিবর্তনের জন্য শেখ হাসিনা এবং তার দেশবাসী বিশ্বসভায় সাধুবাদ পেতেই পারেন। আর তারই প্রমাণ আমরা দেখি যখন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল’ এবং ‘নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল নক্ষত্র’। আমেরিকার প্রভাবশালী ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ভাষায় বাংলাদেশ হচ্ছে ‘দক্ষিণ এশিয়ার আলোকবর্তিকা’ আর গোল্ডম্যান শ্যাক্স তাদের গ্লোবাল অবস্থানে বাংলাদেশকে এন-১১ তে উন্নীত করেছে, যার অর্থ হচ্ছে ১১টি অগ্রসরমান অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ।
দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম প্রধান দেশের সুনাম অর্জন করেছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে একাধিক পদকে ভূষিত করেছে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনের জন্য এমডিজি-৪ পুরস্কার (২০১০)। সাউথ-সাউথ পুরস্কারে তিনি ভূষিত হন ২০১৩ সালে, দেশজুড়ে ১৩ হাজার ৮০০ কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং ৪ হাজার ৫০১টি ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণকে সফলভাবে ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির সংযোগের আওতায় নিয়ে আসার স্বীকৃতিস্বরূপ। ২০১৪ সালে তাকে সাউথ-সাউথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় বিশ্বের দক্ষিণের দেশগুলোতে নেতৃত্বের দূরদর্শিতার স্বাক্ষর হিসেবে। ২০১৫ সালে তিনি জাতিসংঘ কর্তৃক দুটি পুরস্কারে ভূষিত হন, এগুলো হচ্ছেÑ জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাব মোকাবিলায় সফলতার জন্য ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার এবং টেলিযোগাযোগ খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থার পুরস্কার বা ‘আইটিইউ অ্যাওয়ার্ড’।
২০০০ সালে যখন জাতিসংঘে সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) ঘোষণা প্রদান করা হয় তখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নেতা হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আবার ২০১৫ সালে যখন ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জনের লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা (এসডিজি) হয় তখনও তিনি বাংলাদেশের সরকারপ্রধান হিসেবে জাতিসংঘে নেতৃত্বদান করেন। তিনি বিশ্বের একমাত্র নেতা যিনি জাতিসংঘের উন্নয়ন সংক্রান্ত এ দুই মাইলফলক ঘোষণার সময় নিজের দেশের নেতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তার দেশ সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে মর্মে ২০০০ সালের সম্মেলনে তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সামনে। সেই প্রতিশ্রুতি তিনি রক্ষা করেছেন। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সেই যে সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পেরেছে। ২০১৫ সালের সম্মেলনে আবার যখন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেন (যা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করতে হবে) তখন শেখ হাসিনা বিশ্বসভায় এই প্রতিশ্রুতি দেন যে তার দেশ এই লক্ষ্যমাত্রাও যথাসময়ে পূরণ করবে।
শুধুু সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকেন নি তিনি, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে তারই স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী ও বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা। এ হবে এমন এক বাংলাদেশ যেখানে সবাই পাবে সমানাধিকার, ন্যায়বিচার এবং সুষম উন্নয়নের সুযোগ। যেখানে সমৃদ্ধি ও শান্তির মাঝে বাস করবে দেশের প্রতিটি মানুষ। সেই স্বপ্নই দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
সাউথ-সাউথ দেশগুলোর অর্থনৈতিক ক্ষমতার পরিধি ক্রমেই বাড়ছে। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ ২ গুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। প্রায় ৩০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক বিশাল বাজারে পরিণত হবে এ দেশগুলো। তা সত্ত্বেও এ দেশগুলোর পূর্ণ সম্ভাবনা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এ দেশগুলোর প্রতিবছর ৫ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। বর্তমানে বৈদেশিক সাহায্য স্কিমের আওতায় উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রসমূহ বছরে ১৩৮ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে থাকে যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে যায় মাত্র ৩৮ থেকে ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য অর্থ পর্যাপ্ত নয়। সাউথ-সাউথ দেশগুলোর অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোার জন্য এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি যথাযথভাবে তদারকি ও মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ সাউথ-সাউথ দেশগুলোর অর্থ ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীদের একটি ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করেছে, যা আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক সমর্থিত হয়েছে। সম্প্রতি চীন সাউথ-সাউথ সহযোগিতার জন্য ১ বিলিয়ন ডলারেরও

‘আধুনিক বিশ্বে বাংলাদেশ আরও একটি কারণে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করছে, তা হলোÑ একটি শক্ত, সৃজনশীল ও পরিশ্রমী অভিবাসী শ্রমিকদের দেশ হিসেবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আজ বাংলাদেশের প্রায় ৯০ লাখ প্রবাসী নাগরিক রয়েছেন যারা কঠোর পরিশ্রম বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রাখছেন, তাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করছেন।’

বেশি অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে।
শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা শহীদ দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সক্ষম হয়। এ কথা আজ সারাবিশ্ব জানে যে, ১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাংলাদেশের জনগণ তাদের বুকের রক্ত দিয়েছে। সেই আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ পৃথিবীর সব জাতির মাতৃভাষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়াসে সেই দিনটিকে জাতিসংঘ সম্মানিত করেছে, যা আজ বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব দেশে পালিত হচ্ছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আইনের শাসনে প্রতিষ্ঠার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সাথে যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল সেই বিষয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সমুদ্র-আইন সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার যে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত তিনি গ্রহণ করেন, তারই ফলস্বরূপ বাংলাদেশ তার সমুদ্রসীমার ওপর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। অন্যদিকে প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্র ভারত এবং মিয়ানমারও তাদের আইনগত ন্যায্য পাওনা পেয়েছে। কোনো সংঘাত বা যুদ্ধ ছাড়াই এহেন বিরোধ নিষ্পত্তির ঘটনা পৃথিবীতে বিরল।
শেখ হাসিনার শাসনের প্রথম মেয়াদে (১৯৯৬-২০০১) বাংলাদেশে কয়েকটি যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে। এর প্রথমটি ছিল ভারতের সাথে দীর্ঘদিনের সমস্যা গঙ্গা নদীর পানির বণ্টনের ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর। এর মাধ্যমে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ গঙ্গা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় যে ঐতিহাসিক ঘটনা সেই সময়ে ঘটে সেটি হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর। যে সমস্যার আবর্তে সন্দেহ ও অবিশ্বাসের দোলাচলে সেই সময় পর্যন্ত ২৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল, রাষ্ট্রনায়কোচিত পদক্ষেপ নিয়ে শেখ হাসিনা সেই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের অবসান ঘটান বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে। পৃথিবীর সাম্প্রতিক ইতিহাসে শান্তি প্রতিষ্ঠার এমন নজির বিরল। মার্কিন কংগ্রেস এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এই সাহসী দুই চুক্তির জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রসংশা করেছে। সম্প্রতি কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা, রাজনৈতিক বিচক্ষণতা ও প্রশাসনিক কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ভারতের সাথে অর্ধশতক ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সমাধান করেছেন ৬৮ বছর আগের ‘সীমান্ত নির্ধারণ চুক্তি’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে। ফলে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার এবং ন্যায়বিচার পেয়েছে দীর্ঘদিন ভাগ্যবিড়ম্বিত থাকা উভয় দেশের ছিটমহলবাসী। প্রকৃত অর্থেই শেখ হাসিনা শান্তি ও স্থিতিশীলতার মূর্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের জন্য। আশার আলোকবর্তিকা হয়ে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন বিশ্বের শত কোটি নিপীড়িত মানবতার জন্য।
আধুনিক বিশ্বে বাংলাদেশ আরও একটি কারণে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করছে, তা হলোÑ একটি শক্ত, সৃজনশীল ও পরিশ্রমী অভিবাসী শ্রমিকদের দেশ হিসেবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আজ বাংলাদেশের প্রায় ৯০ লাখ প্রবাসী নাগরিক রয়েছেন যারা কঠোর পরিশ্রম বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রাখছেন, তাদের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করছেন। একই সাথে নিজেদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা স্বদেশে পাঠিয়ে তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তবে এসব প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনে থাকে অজ¯্র দুঃখগাঁথা, বঞ্চনা আর প্রতারণা কাহিনি। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা নিজেদের ন্যায্য বেতনটুকু থেকেও বঞ্চিত হন। অথচ এই প্রবাসীরাই মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে কি অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন বিদেশের মাটিতে। আবার আজ তারা সেই বিদেশে থেকেও নিজের দেশকে সমৃদ্ধ ও উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে রাখছেন ব্যাপক অবদান। সহ¯্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের আয় রেখেছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। দেশে বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি। ৯০ লাখ প্রবাসী শ্রমিকের ওপর দেশের প্রায় ৩৩ শতাংশ মানুষ নির্ভর করে, যাদের সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এই অভিবাসী শ্রমিক এবং বিদেশে অবস্থানরত দক্ষ বাংলাদেশি পেশাজীবীদের স্বীকৃতি প্রদান করেছে; তাদের সুরক্ষা এবং দেশে তাদের বিশেষ সম্মানের ব্যবস্থা করেছে এবং তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য গ্রহণ করেছ নানামুখী পদক্ষেপ। প্রবাসে তাদের সমস্যা সমাধানে নিদের দেশের সরকারি প্রতিনিধি/কূটনীতিকদের যেমন তিনি নির্দেশনা দিচ্ছেন ঠিক তেমনি বিশ্বসভায় তিনি এই দাবি তুলেছেন যে প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণে হোস্ট কান্ট্রি বা শ্রমিকদের অবস্থানকারী রাষ্ট্রের দায়িত্ব অনেক। তাদেরই এটি নিশ্চিত করা কর্তব্য যাতে তাদের দেশে প্রবাসী শ্রমিকদের কেউ শোষণ, নির্যাতন বা কোনোরকম বৈষম্য বা বঞ্চনার শিকার হতে না হয়। একই সাথে উন্নত দেশগুলোরও এ বিষয়ে যতœবান হওয়া উচিত যাতে তাদের দেশে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষিত হয় এবং সেই সব সংগ্রামী শ্রমজীবী জনতা যেন কোনো প্রকার শোষণ, নির্যাতন বা প্রতারণার শিকার না হন।
দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের অধিকার আদায়ে এতটা সোচ্চার এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কণ্ঠস্বর হতে পারে বলেই হয়তো বাংলাদেশ গত ৬টি বছরের জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে এবং বিভিন্ন কমিটিসমূহের নির্বাচনে জয়লাভ করে নির্বাচিত হয়েছে। বস্তুত, এ সময়ের মধ্যে কোনো আন্তর্জাতিক নির্বাচনেই বাংলাদেশ পরাজিত হয়নি; বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রসমূহ বাংলাদেশের কথা ভেবে, বাংলাদেশ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে ওইসব নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারও করে নিয়েছে। বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ তথা বিশ্ব নেতৃত্বের আস্থা এবং প্রগাঢ় ভরসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে এসব আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে।
জাতিসংঘের সেকেন্ড কমিটির চেয়ার হিসেবে অধিকাংশ বিতর্কেই বাংলাদেশ সকল সদস্যকে মতৈক্যে নিয়ে আসতে পেরেছে। পিস বিল্ডিং কমিটি (পিবিসি) বা অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইসিওএসওসি) চেয়ার হিসেবে বিশ্বব্যাংকে জাতিসংঘ কমিটিসমূহের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করাতে সক্ষম হয় বাংলাদেশে। সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের চেয়ার হিসেবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে বাধাসমূহ ও করণীয় চিহ্নিতকরণে বাংলাদেশ নেতৃস্থানীয় ভূমিকা গ্রহণ করে। জাতিসংঘের ব্যুরো সদস্য এবং এলডিসি গ্রুপের চেয়ার হিসেবে ইস্তাম্বুল কর্মপরিকল্পনা (আইপিএও) প্রণয়নে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখে; শুধু তাই নয়,
জাতিসংঘের বিভিন্ন ফান্ড যেমন ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, ইউএন উইমেন, জাতিসংঘ জনসংখ্যা কমিশন ইত্যাদির চেয়ার হিসেবে ওইসব অঙ্গ সংগঠনের কর্মপরিকল্পনায় ইস্তাম্বুল কর্মপরিকল্পনা অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যতম ভূমিকা পালন করে।
সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতিসংঘ কমিটির ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে ২০১০ সালে বাংলাদেশ উক্ত কমিটির প্রস্তাব সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মতৈক্যের অর্জনে সফল হয়। ‘মানবপাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতিসংঘের বন্ধু’ রাষ্ট্রসমূহের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘের প্রস্তাব পাসের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। মানবপাচার প্রতিরোধ ও অবসানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সাহসের সাথে উটের জকি ও দাস হিসেবে শিশুদের ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মাঝে সোচ্চার জনমত গড়ে তোলেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে পাচার হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি শিশুদের উদ্ধারের নির্দেশ দেন ও তাদের উদ্ধার পরবর্তী পুনর্বাসনের পদক্ষেপ সংক্রান্ত সার্ক সম্মেলনে ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘের ‘ফ্রেন্ডস অব মিডিয়েশন’, ‘ফ্রেন্ডস অব ইনএ্যলিনেবল্ রাইটস অব প্যালেস্টাইন’, ‘ফ্রেন্ডস অব নো ফুড ওয়েস্ট, নো ফুড লস’ ইত্যাদি ভূমিকায় মানবতার মর্যাদা রক্ষা এবং জাতিসংঘ সদনের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
বস্তুতপক্ষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি অত্যন্ত সম্মানজনক সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে এবং বর্তমানে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসেবে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশকেই চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। কেবল সর্বোচ্চ সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবেই নয়, সক্ষমতার সাথে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকারী দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের সুনাম আজ জাতিসংঘে ব্যাপক। জাতিসংঘের ‘হি অ্যান্ড শী’ প্রোগ্রামের চ্যাম্পিয়ন হিসেবেও বাংলাদেশের নাম চলে আসে সবার আগে। জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শিক্ষাই সর্বাগ্র’ শীর্ষক প্রকল্পে এবং মহাসচিবের স্বাস্থ্যরক্ষা সংক্রান্ত উদ্যোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে গণ্য করা হয়। মহাসচিবের নেতৃত্বে শান্তিরক্ষী নিয়োগ সংক্রান্ত সিনিয়র পরামর্শক কমিটির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষীদের নীল হেলমেট প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত আঞ্চলিক রিভিউ কমিটির ঢাকা কনফারেন্সের আয়োজন করে বাংলাদেশ, ২০১৪ সালে এবং সদস্য রাষ্ট্রসমূহের শান্তিরক্ষীদের প্রশিক্ষণ দান করে। প্রতি ১০ শান্তিরক্ষীর মধ্যে একজন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ নারী শান্তিরক্ষীদের জন্য নীল হেলমেট, বর্ম ও তলোয়ার চালানো এবং পুলিশের একটি নারী ইউনিট বসানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
জলবাযু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে জাতিসংঘে অত্যন্ত সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অপূরণীয় ক্ষতি ও চ্যালেঞ্জকে বিশ্ববাসীর সামনে যথার্থভাবে তুলে ধরতে তিনি সদা সচেষ্ট থেকেছেন। তিনিই একজন নেতা যিনি এ বিষয়টিকে বিশ্ববাসীর সামনে বারংবার তুলে ধরেছেন যে, পরিবেশ দূষণকারী না হয়েও স্বল্পোন্নত ও দ্বীপ-রাষ্ট্রসমূহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সবচেয়ে বড় হুমকির মধ্যে রয়েছে। কেবল বাগাড়ম্বর বা উচ্চবাচ্য না করে এ বিষয়টি তিনি কর্মপরিকল্পনার মধ্যে গ্রহণ করেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে কীভাবে বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগুনো যায় তা নিজে তদারক ও কাজ করে চলেছেন। আজ সম্পদের স্বল্পতা ও সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সংক্রান্ত দুটি ফান্ড গঠন করেছে। তাই সংগত কারণেই জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) তাকে চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। কেননা পরিবেশ সুরক্ষার জন্য তিনিই বিশ্বের সিংহভাগ জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর; এবং পরিবেশ নীতিমালা গঠনের ক্ষেত্রে জোরাল ভূমিকা রেখেছেন। জলবায়ু ঝুঁকি ফোরাম (সিভিএফ) এবং জলবায়ু ঝুকিপ্রবণতা তদারকি (সিভিএম) গঠন করেছেন তিনিই। তার প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়েই জাতিংঘে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিষয়ের দায়িত্ব বিষয়ক রাষ্ট্রদূত’ ফোরাম (Ambassadors with Responsibility to Climate Change-ARC) এবং ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বন্ধু’ (Friends of Climate Change-FCC) গঠন করা হয়েছে, যারা জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তার যুদ্ধ ঘোষণার পরই আমরা দেখতে পাই যে অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এই জটিল ইস্যুতে এগিয়ে আসছেন।
যুদ্ধ-বিগ্রহ, ভয়াল বন্যা, অনাবৃষ্টি, ক্ষরা, নদীভাঙন ইত্যাদি নানা কারণে সাম্প্রতিককালে দেশে দেশে যে হারে মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে বা নিজ দেশে কাজ হারিয়ে দেশান্তরী হয়ে পড়ছে জীবিকার তাগিদে, কিংবা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় খুঁজছে বিভিন্ন দেশে তখন সেই সব কঠিন সমস্যার কারণ খুঁজে আর কোনো মানুষ যেন শরণার্থী না হয়, বাস্তুচ্যুত না হয় তার ব্যবস্থা করার জন্য জোরাল দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। সম্পদশালী দেশগুলো সম্পদের অপব্যবহারের মাধ্যমে আজ পৃথিবীর পরিবেশের এই দশা করেছে, যদিও তাদের অবিমৃষ্যকারিতার ফল পেতে হচ্ছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে, যারা হয়তো কোনোভাবেই এই ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা জলবায়ু’র কারণে উদ্বাস্তু হওয়ার জন্য দায়ী নয়। অথচ তাদেরই সবচেয়ে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে। বাংলাদেশ মনে করে এই অবস্থা হতে উত্তরণের দায় এবং দায়িত্ব উভয়ই উন্নত বিশ্বকে নিতে হবে। হয় তাদের এসব নানান প্রক্রিয়ায় করা পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে হবে; অথবা তাদের এমন কাজ করতে হবে যাতে যুদ্ধ-বিগ্রহ না বাধে বা মানুষ নিজের দেশ ছাড়তে বাধ্য না হয়।
শেখ হাসিনা কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী। লক্ষ্য অর্জনে তিনি পিছপা নয় এক কদমও। তার অক্লান্ত প্রয়াসের ফলে বাংলাদেশের কর্মজীবী জনসংখ্যার মাঝে আজ নারীর অংশগ্রহণ প্রায় ৩৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা পূর্বে ছিল মাত্র ৭ শতাংশ। আজ বাংলাদেশে সরকার প্রধান একজন নারী। জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং সংসদ উপনেতাও নারীÑ নারীর ক্ষমতায়নের এ এক অনবদ্য সংযোগ। শেখ হাসিনার বাংলাদেশ সেই গুটিকয়েক রাষ্ট্রের মধ্যে অন্যতম যেখানে বছরের শুরুতে দেশব্যাপী শিশুদের মধ্যে ৩২৬ মিলিয়ন বই বিতরণ করা হয় বিনামূল্যে। বাংলাদেশ সেই রাষ্ট্র যেখানে এনজিওরা উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সরকারের সাথে সমান তালে অংশগ্রহণ করে। তাই বাংলাদেশ আজ তার উদ্ভাবনী সুশাসন প্রক্রিয়া এবং যুক্তির নিরখে চলার জন্য বিশ্ব দরবারে সম্মানিত। সামগ্রিক এই প্রক্রিয়ায়, সন্দেহ বা বিস্ময়ের কোনো অবকাশই নেই যে, সেই বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনা, আজ জাতিসংঘ তথা বিশ্ব পরিম-লে শান্তি ও ন্যায্যতার এক মূর্ত প্রতীক হিসেবে নিজের দেশ ও জনগণকে তুলে ধরেছেন সবার ওপরে।
জয়তু বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান
* জনগণের ক্ষমতায়ন মডেল : অস্থিরতা, সহিংসতা, পরমত অসহিষ্ণুতা, বৈষম্য এবং ব্যাপক জন-অসন্তোষের ক্ষেত্রে এই মডেল বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
* কালচার অব পিস : বিগত সময়ে সরকারের থাকাকালীন বাংলাদেশ কর্তৃক জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রচলন করা হয়। জাতিসংঘের ভিতরে ও বাইরে এই ধারণা ব্যাপক সমর্থন লাভ করে; কেননা এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, যা সমগ্র জাতিসংঘ ব্যবস্থার মাঝে অনুরণিত হয়।
* শান্তিরক্ষা কার্যক্রম (পিস কিপিং) : শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা সর্বজনবিদিত ও স্বীকৃত। জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিম-লে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকর। তার গতিশীল নেতৃত্বে বিশ্বে আজ সর্বোচ্চ সংখ্যক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে সমাদৃত বাংলাদেশ।
* শান্তি বিনির্মাণ (পিস বিল্ডিং) : তার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তি বিনির্মাণের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেছে। স্বল্পদিন হলো এ সংক্রান্ত কমিশন গঠিত হয়েছে, যা ইউএন পিস বিল্ডিং কমিশন নামে পরিচিত। বাংলাদেশ এর গুরুত্বপূর্ণ মিটিংসমূহে সভাপতিত্ব করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতার কারণে এ সংক্রান্ত সব কার্যক্রমের আলোচনায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে।
* বহুমাত্রিক নেতৃত্ব : নানামুখী জাতীয় ও বৈশ্বিক ইস্যুতে চ্যালেঞ্জ নিতে পিছপা নন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার অবিচল নেতৃত্বে বাংলাদেশে জাতিসংঘের বিভিন্ন কমিটি এবং অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থায় সভাপতি এবং সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছে। বিগত ছয় বছরে বাংলাদেশে কোনো একটি নির্বাচনেও পরাজিত হয়নি। সকল দেশ ও তাদের নেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ এবং তার নেতা শেখ হাসিনা।
* সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মডেল দেশ : জাতিসংঘ মহাসচিবের ভাষ্যমতে বাংলাদেশ এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কেবল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যেই নয়, অনেকগুলো উন্নত দেশের চেয়েও বাংলাদেশের এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সাফল্য ব্যাপক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে এর সফল বাস্তবায়ন তদারক ও মূল্যায়ন করে থাকেন এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
* ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের সুরক্ষা ও নেতৃত্ব দান : বর্তমানে বাংলাদেশ ৪৮টি স্বল্পোন্নত দেশের নেতা ও মুখপাত্র। তাই জাতিসংঘ তথা আন্তর্জাতিক ফোরামে এসব দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ের নেতৃত্বও বাংলাদেশেরই। সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশ এই পদে নির্বাচিত হয়; বাংলাদেশের নেতা শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাই বাংলাদেশকে এই পদে আসীন করেছে। এলডিসি রাষ্ট্রসমূহের স্বার্থরক্ষায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
* ভিন্ন জীবনের মানুষের সমস্যাকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসা : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই জাতিসংঘের সকল রাষ্ট্রের কাছে আজ অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও অটিজম সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গের সমস্যাবলি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে। এ সংক্রান্ত বাংলাদেশের প্রস্তাব পৃথিবীর সব কটি রাষ্ট্রের অকুণ্ঠ সমর্থন লাভ করেছে। বিষয়টির প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশের নাম আজ সব দেশ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
* জলবায়ুর ঝুঁকি আক্রান্তদের সমস্যায় নেতৃত্ব : জাতিসংঘের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সক্রিয়ভাবে কাজ করে দেখিয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ঝুঁকি কতটা। এ সমস্যার কারণ খুঁজে আর কোনো মানুষ যেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শরণার্থী না হয়, বাস্তুচ্যুত না হয় তার ব্যবস্থা করার জন্য জোরাল দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। সম্পদশালী দেশগুলো সম্পদের অপব্যবহারের মাধ্যমে আজ পৃথিবীর পরিবেশের এই দশা করেছে, যদিও তাদের অবিমৃষ্যকারিতার ফল পেতে হচ্ছে স্বল্পোন্নত দেশগুলো, যারা হয়তো কোনোভাবে এই ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা জলবায়ু’র কারণে উদ্বাস্তু হওয়ার জন্য দায়ী নয়। অথচ তাদেরই সবচেয়ে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে। বাংলাদেশ মনে করে, এই অবস্থা হতে উত্তরণের দায় এবং দায়িত্ব উভয়ই উন্নত বিশ্বকে নিতে হবে। হয় তাদের এসব নানান প্রক্রিয়ায় করা পরিবেশ দূষণ বন্ধ করতে হবে; অথবা তাদের এমন কাজ করতে হবে যাতে যুদ্ধ-বিগ্রহ না বাধে বা মানুষ নিজের দেশ ছাড়তে বাধ্য না হয়। জলবায়ু ঝুঁকি ফোরাম (সিভিএফ) এবং জলবায়ু ঝুঁকিপ্রবণতা তদারকি (সিভিএম) গঠন করেছে বাংলাদেশ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর প্রতিষ্ঠা করেন জাতিসংঘের ৬৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে।
* আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ আইনি সমাধান : শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সাথে যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল সেই বিষয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালে (International Tribunal on the Law of the Seas-ITLOS) যাওয়ার যে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত তিনি গ্রহণ করেন, তারই ফলস্বরূপ বাংলাদেশ তার সমুদ্রসীমার ওপর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। অন্যদিকে প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্র ভারত এবং মিয়ানমারও তাদের আইনগত ন্যায্য পাওনা পেয়েছে। কোনো সংঘাত বা যুদ্ধ ছাড়াই এহেন বিরোধ নিষ্পত্তির ঘটনা পৃথিবীতে বিরল।
* জাতিসংঘের মাধ্যমে অভিবাসীদের অধিকারের সুরক্ষা : অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষার জন্য নিরলস কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সংক্রান্ত জাতিসংঘ কমিটিতে তিনি যথার্থভাবে তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন এবং তার পক্ষে সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়ছেন। অভিবাসী শ্রমিকের মানবাধিকার, কাজের পরিবেশ, বেতন ও নিরাপত্তা এসব বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য সকল রাষ্ট্রের প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
* সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশনের কণ্ঠস্বর : সাউথ-সাউথ সংক্রান্ত জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ। আর সাউথ-সাউথের কণ্ঠস্বর হচ্ছেন শেখ হাসিনা। সম্প্রতি এই রাষ্ট্রসমূহের সাফল্য ব্যাপক, যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দৃশ্যমান।
জাতিসংঘ সনদের মূল লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়ন
* প্রথমত : সহিষ্ণুতার চর্চা এবং ভালো প্রতিবেশী হিসেবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান;
* দ্বিতীয়ত : আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার সাথে একতাবদ্ধ থাকা;
* তৃতীয়ত : এই নীতির প্রতি অবিচল থাকা যে শক্তি প্রয়োগ কোনোভাবে করা হবে না, একমাত্র সামষ্টিক স্বার্থ ছাড়া;
* চতুর্থত : বিশ্বের সকল মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহকে কাজে লাগানো;
* প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সনদের এসব মূলনীতির আলোকে একটি সুন্দর, নিরাপদ ও শন্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন।



Sunday, September 15, 2013

মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে, আওয়ামী লীগ সরকার বিগত বছরগুলোতে কী কী উন্নয়ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তনয় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে, আওয়ামী লীগ সরকার বিগত বছরগুলোতে কী কী উন্নয়ন করেছে। এই উন্নয়ন বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের সঙ্গে তুলনা করতে হবে। নিজেদের মধ্যে তর্কবিতর্ক থাকতে পারে। তবে সবকিছু ভুলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে আমাদের কেউ হারাতে পারবে না।’
সভায় আজ রোববার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে দিনের সর্বশেষ কর্মিসভায় সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন। এরপর তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ নিয়ে আজ তিনি তিনটি পথসভা ও একটি কর্মিসভায় অংশ নেন। বিএনপি এলে বাংলাদেশকে অন্ধকার করে দেবে:এর আগে বিকেলে ময়মনসিংহের মুক্তগাছার রামকিশোর মডেল হাই স্কুল মাঠে আয়োজিত পথসভায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় ফিরে আসলে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বানানো ১৪ হাজার ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র বন্ধ করে দেবে। বিএনপির রেখে যাওয়া সাড়ে তিন মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুতের উত্পাদন নিয়ে গেছে নয় হাজার মেগাওয়াটে। সেই বিদ্যুত্ উত্পাদন আবার বন্ধ হয়ে যাবে। তখন আবার বাংলাদেশকে অন্ধকার করে দেবে। জঙ্গিবাদ আবার দেশে ফিরে আসবে।সজীব ওয়াজেদ জয় আরও বলেন, বিএনপি আমলে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বলা হত। আর এখন বাংলাদেশকে বলা হয় রাইজিং স্টার। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন দেখতে হবে দেশ কোথায় যাচ্ছে। ভিশন-২০২১ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের জন্য তিনি আবারও নৌকায় ভোট চান।ক্ষমতায় গেলে আয় দ্বিগুণ হবে:ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে আজ গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা স্কুলমাঠে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে আপনাদের আয় দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা ওয়াদা করছি, আবার ক্ষমতায় গেলে আয় দ্বিগুণ করব।’জয় বলেন, টঙ্গীর পথসভা:এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে টঙ্গীর টেশিস (টেলিফোন শিল্প সংস্থা) মাঠে আয়োজিত এক পথসভায় বক্তব্য দেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আগামীতে ক্ষমতায় গেলে গাজীপুরে ইলেকট্রনিক শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।পোশাকশ্রমিকদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে আপনাদের বেতন বাড়িয়েছি। এখন আবার বেতন বাড়ানো হচ্ছে। আগামীতে ক্ষমতায় আসলে আরও
বাড়ানো হবে।’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করলেন, বর্তমান সরকার গরিব মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে অ্যাপার্টমেন্টের ব্যবস্থা করছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছে। ভিশন-২০২১-এর অর্ধেক পথ পর্যন্ত আমরা গিয়েছি। বাকি অর্ধেক পথ যাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে।পথসভাগুলোতে স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।জয় আজ সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিনি গাড়িতে ওঠেন। বিকেল চারটার দিকে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস মাঠসংলগ্ন জিমনেশিয়ামে আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে তিনি বক্তৃতা করবেন।
‘গত পাঁচ বছরে দেশের প্রত্যেক মানুষের আয় বেড়েছে। গড় আয় ৪০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৮০ হাজার টাকা হয়েছে। মোটা চালের দাম ৪২ টাকা থেকে ২৮ টাকায় নেমে এসেছে। গত সাড়ে চার বছরে আমরা সারা দেশে একটিও বোমা হামলা হতে দিইনি। যদি বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে, তবে আবার সন্ত্রাস, বোমা হামলা, হাওয়া ভবন ফিরে আসবে। দুর্নীতিতে প্রথম স্থান থেকে আমরা ৪০তম স্থানে নামিয়ে এনেছি। সেটা আবারও প্রথম স্থানে ফিরে যাবে।’সজীব ওয়াজেদ বলেন, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় গেলে পোশাক কারখানার পাশাপাশি টেলিভিশন কারখানা, কম্পিউটার কারখানা, তথ্যপ্রযুক্তি কারখানা করবে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি নৌকায় ভোট চান। 

৭১ এর ২৬ শে মার্চ এবং ১৬ ডিসেম্বরকে বাদ দিয়ে কিছুই করতে পারিনা।

আমরা ৭১ এর ২৬ শে মার্চ এবং ১৬ ডিসেম্বরকে বাদ দিয়ে কিছুই করতে পারিনা।  ৭১ আমাদের রক্তে মাংসে অস্তি মজ্জায় চেতনায় শিরায় উপ শিরায় ধমনিতে থাকা উচিত। মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী যোগ্য স্বার্থক সফল রাজনৈতিক দল, গর্বিত দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ।

সে ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সংগ্রামী সঙ্গী সাথীদের সারা জীবনের ত্যাগ তিতিক্ষা আর কঠিন সংগ্রাম শেষে ৩০ লক্ষ্য তাজা প্রান, ২ লক্ষ ৪০ হাজার মা'বোনের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ 'ইজ্জতে'র'' বিনিময়ে প্রাপ্ত ফসল যে স্বাধীনতা, ৪২ বছর পর আজ সে স্বাধীনতায় কুঠার আঘাত হেনেছে ৭১ এর ঘাতক দালাল হায়েনা নরপশু ইসলামের লেবাসধারী মউদুদীর মদদপুষ্ট জঙ্গি জানোয়ার জামাত এ ইসলাম, নেজাম এ ইসলাম আর মুসলিম লীগের রূপান্তরিত আল বদর আল শামস আর রাজাকার ।  
এদের সাথে যোগ দিয়েছে বিশ্ব বাটপার ধূর্ত অকপট শয়তান জিয়ার বিধবা স্ত্রী কুপুত্র তারেক রহমান। এদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ইন্ধন যোগাচ্ছে ডঃ ইউনুসসহ কিছু বামপন্থী চরিত্রহীন দিকভ্রান্ত পথভ্রষ্ট নীতি আদর্শ বিবর্জিত ৭৫ এর ঘাতক ফ্রিডম পার্টির উচ্চাভিলাষী সেনা সদস্যের অবৈধ সন্তানেরা।  
এদের সাথে যোগ দিয়েছে, জে এম বি হিজবুল তাহরীর বাংলা ভাইয়ের অনুসারী বিপথগামী প্তহভ্রষ্ট কুলাঙ্গার জিহাদী জল্লাদ আল ক্বায়েদার বীন লাদেনের ঘনিষ্ট বন্ধু সহকর্মী আল্লামাখ্যাত আহমেদ শফি। 
এর সাথে যোদ দিয়েছে মরহুম আমিনীর কওমী মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক/মোদারেছিন যাদের সকল আর্থিক সাহায্য আসছে পাকিস্তান থেকে, তারেক রহমান কর্তৃক লন্ডন থেকে। সারা বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা জামাত ই ইসলামের আর্থিক অনুদানকারী সংগঠন/সংস্থা " ইবনে সীনা" ইসলামী ব্যাংকের মতো আরো অনেক আরাবিয়ান দাতাগোষ্ঠী। আওয়ামী লীগের কোন আর্থিক অনুদানকারী দাতা নেই। আছে হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত বাংলার গরীব দুখি ছিন্নমূল মানুষের অগাধ ভালোবাসা আর দোয়া। জয় আমাদের হবেই ইনশায়াল্লাহ। মানুষের এই অগাধ বিশ্বাস আর ভালোবাসার কাছে ওদের সকল চক্রান্ত যড়যন্ত্র হীনমনোবৃত্তি ধূলায় মিলিয়ে যাবে ।তাই আজ ওদেরকে প্রতিহত করার জন্য ৭১ এর মতোই আবার গর্জে উঠতে হবে।
আপনারা শুধু আর একবার নৌকায় ভোট দিন। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সোনার বাংলা গড়ার সুযোগ দিন। ওরা আপনা আপনিতেই বিলীন হয়ে যাবে।জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা
সভাপতি 
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ
সভাপতি
সময়৭১
সহ সভাপতি
কেন্দ্রীয় কমিটি
বাংলাদেশ আওয়ামী তরুণ লীগ
    

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড।

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। একটি সুখি সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে শিক্ষাই হচ্ছে মূল চালিকাশক্তি।
যে কোন জাতি গঠনে শিক্ষাই হচ্ছে সফলতার মূল চাবিকাঠি। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি কোন কালেই বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাড়াতে পারেনি। শিক্ষা ক্ষেত্রে  যে জাতি যতো বড় শিক্ষিত, সে জাতিই বিশ্বের সবচে' সন্মানী ও সুখি । বাঙ্গালী জাতি কেন এতো ৪২ বছর পরেও এতোটা পিছিয়ে থাকবে? যে দেশে ৯ পাশ মহিলা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়, সে দেশে একজন অশিক্ষিত প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রী পরিষদ থেকে ভবিষ্যত নাগরিকের সুশিক্ষার চিন্তা ও সুদূরপ্রসারী, বৃহৎ, সঠিক পরিকল্পা কি করে জাতি আশা করে?
শিক্ষার ক্ষেত্রে বিগত স্বাধীনতার ৪৫ বছরে কোন রাজনৈতিক দলের সরকার বা সামরিক জান্তার প্রধান বাঙ্গালী জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার করে, প্রসাশনিক সকল জটিলতা ঢেলে সাজাতে সক্ষম হয়নি । ১৯৭৫ সালের আগষ্ট মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে এক নবতর রুপ প্রদানের মহা পরিকল্পনা করেছিলেন এবং জাতিরজনক কে এদতবিষয়ে কঠোর পরিশ্রম ও সময় দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তৎকালীন শিক্ষা সচিব মরহুম এম, মোকাম্মেল হক। যিনি জাতিরজনকের জীবনের শেষ সভা করেছিলেন ১৪ আগষ্ট রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাপনি অনুষ্ঠানের আগের রাতে। যদি জাতির জনক কে নির্মমভাবে হত্যা না করা হতো, আমি অন্য কোন বিষয়ে বলবো না, অন্ততঃ জাতি শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক অনেক দূর এগিয়ে যেতে সক্ষম হত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাঙ্গালী জাতির সবইতো শেষ হয়ে যায়। ৭৫ এর পরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, সমৃদ্ধি উন্নয়ন নিয়ে কোন সরকার এতোটা আন্তরিকও ছিলনা, নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের চিন্তা ছাড়া কেউ কল্পনাও করেনি এই অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থাচালু করার কথা। এতো সব সহায়ক জনশক্তি, আর্থিক সঙ্গতি, জমি স্থান থাকা সত্বেও অশিক্ষিত বাঙ্গালীর জীবনে চালু হয়নি সুশিক্ষার স্রোতধারা ।  
বরং শিক্ষার নামে বিগত জোট জামাত বি এন পি সরকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিনত করার ফলে জাতি ৫০ বছর পিছিয়ে গিয়েছে। বিএনপি'র শিক্ষা প্রতি মন্ত্রীর স্ত্রী তাঁর নিজের নামে ভূয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে লুট পাট করেছে কোটি কোটি টাকা। অপর দিকে আওয়ামী লীগের শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে মাঠ পর্যায়ের স্কুল গুলোতেও প্রান ফিরে পেয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রশাসনিক সংস্কারসহ মাঠ পর্যায়ে পদবী/বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রণয়ন করে শিক্ষার জগতে এনেছেন এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন। আওয়ামী লীগ সরকার ৫ ও ৮ শ্রেনীর সে মান্দাতা আমলের পুরাতন শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে এক নতুন উদ্যম ও আগ্রহের সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। ভাবতেও ভালো লাগছে যে, আজ গরীব দিন মজুরের সন্তানও বিনা মূল্যে বই পেয়ে হাসতে হাসতে স্কুলে যাচ্ছে।    মাঠ পর্যায়ের গ্রামে গঞ্জের শিশু কিশোরদের মাঝে যেনো স্কুলে যাবার জন্য এক প্রতিযোগিতার উন্মেষ ঘটেছে।  আপনার শিশুর সু শিক্ষার কথা কেউ ভাবেনি, যতোটা ভেবেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আপনার শিশুর স্কুলের ফি' দিতে না পারার কারনে এবং দুই খানা বই কিনে না দিতে পারার কারনে আপনার সন্তান রয়ে যেতো মূর্খ অচেতন অথর্ব লাচার একজন অশিক্ষিত নাগরিক ।
তাই আজ আওয়ামী লীগ সরকার বিনা পয়সায় বই বিতরনসহ স্কুল ফি' মউকুফ করে  অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার কারনে আপনার সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে পারছেন। শিক্ষিত হয়ে উঠছে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নাগরিক আপনার বংশের অপ্রস্ফুটিত ফুল। আপনার সন্তান হচ্ছে শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত, প্রস্ফুটিত। আপনি হচ্ছেন একজন গর্বিত পিতা যার সন্তান জননেত্রী শেখ হাসিয়ার প্রদত্ত শিক্ষা নীতিমালা ও ব্যবস্থার ফল হিসেবে আজ হতে যাচ্ছে একজন শিক্ষিত নাগরিক। আপনার বিবেক আপনার বুদ্ধিমত্তা আপনার সচেতন নাগরিকত্বের বহিঃপ্রকাশ। আপনি নিশ্চয়ই আগামী নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না। আওয়ামী লীগের সাথে থাকুন। দেশ গড়ার কাজে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করে তুলুন। নৌকায় ভোট দিয়ে একটি সুখি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলুন। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
মোকতেল হোসেন মুক্তি
মুক্তিযোদ্ধা
সভাপতি
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ
সভাপতি
সময়৭১
সহ সভাপতি
কেন্দ্রীয় কমিটি
বাংলাদেশ আওয়ামী তরুণ লীগ


"সেই রাতের কল্পকাহিনী" সকল মুজিব সৈনিককে এই অসাধারণ ভিডিওটি দেখার অনুরোধ...

পাকিস্তানের আই এস আই, ঘাতক দালাল জামাত শিবির হুজি জে এম বি, হিজবুল তাহরীর ও বি এন পি'র সুইসাইড স্কোয়াড কে মোটা অংকের অর্থ প্রদান করে ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার হীন চক্রান্ত ব্যর্থ হবার পর জিয়ার কুপুত্র তারেক, হারিস গং রা কিন্তু বসে নেই। সর্বোপরি আওয়ামী লীগের শেষ ভরসা সজীব ওয়াজেদ জয় ওদের টার্গেট । এ কথা বোধ হয় আঙ্গুল দিয়ে আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রশাসনকে দেখিয়ে দেবার প্রয়োজন নেই। ভারতের প্র্যাতঃ মহাত্মা ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করেছিল তারই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। 

যে কথা না বললেই নয়। আমরা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিরাপত্তা চাই। নেত্রী হয়তো বা প্রধানমন্ত্রী বিধায় সবার দৃষ্টি তাঁর দিকেই। সবাই তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত বা সজাগ আছেন। সজীব আজও বাংলাদেশের কোন বিশাল বড় মাপের কোন নেতা নয় কিন্তু সে আজ জাতির হাল ধরার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছেন এই সমাজ, এই জাতির ভাগ্যোন্নয়নে তার মেধা কাজে লাগাবার বাসনায়। সজীব আজ জনসভা করছেন, মানুষকে দু'চার কথা বলতে বুঝাতে পারছেন। মিডিয়ায় ইন্টারভিঊ দিতে পারছেন। পাশাপাশি খালেদার দুর্নীতির দায়ে মুচলেকা দিয়ে দেশান্তরী পুত্রের শোকে বি এন পি মূহ্যমান। কিন্তু ওরা নরপিশাচের চেয়েও ভয়ানক। ওদের ভিতরে সজীবের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের এক আগ্নেয়গিরি গুমরে ঘাপটী মেরে আছে। যে কোন সময়ে সে আগ্নেয়গিরি মহা প্রলয়ের অগ্নি স্ফুলিঙ্গ হয়ে আওয়ামী লীগ তথা গোটা জাতিকে আঘাত হানতে পারে। সময় থাকতেই আমাদের সাবধান থাকতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে সজীবের নিরাপত্তা যথষ্ট নয় বলে আজ চট্টগ্রামের শিবিরের ক্যাডার সকলের অজান্তেই সজীবের পাশে গিয়ে দাড়াতে পেরেছে। প্লীজ সবাই শেয়ার করুন। 

Sunday, March 11, 2012

বাড়িটি ফিরিয়ে দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা

বাড়িটি ফিরিয়ে দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা 
বর্তমানে থানা হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া বাড়িটি জনগণের সেবার জন্য সরকারকে ফিরিয়ে দিলেন শেখ রেহানা । সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে। তখন বিদেশে অবস্থান করায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা প্রাণে বেঁচে যান। মা-বাবা-ভাই-আত্মীয়-স্বজন সব হারিয়ে শেখ রেহানা তখন এতিম। এতটুকু আশ্রয়ও ছিল না। মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার ২০০১ সালের ১১ জুলাই ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার এক বিঘার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি (বাড়ি নং ৪১/এ (পুরাতন) ২১ (নতুন), সড়ক নং-৬) প্রতীকি মুল্যে জাতির পিতার কন্যা হিসেবে শেখ রেহানার নিকট বিক্রয় দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া ও সন্তানদের সরকার ১৯৮১ সালে যেভাবে গুলশানে ৩২ কাঠার পরিত্যক্ত বাড়িটি ১০১ টাকায় বিক্রি করেছিল একইভাবে সরকার এই বাড়িটি দেয়। খালেদা জিয়া এখনো গুলশানের সেই বাড়ির মালিক। কিন' জাতির পিতার কন্যা শেখ রেহানার ক্ষেত্রে তার বিপরীতটা ঘটেছে। বিএনপি-জামাত জোট সরকার বিনা নোটিশে ২০০২ সালের জানুয়ারি মাসে শেখ রেহানার বাড়িটি দখল করে। অথচ সরকার রেজিস্ট্রি করে বাড়িটি শেখ রেহানার নিকট বিক্রি করে। তাঁর নামে নামজারীও করা হয়। বাড়ীটিতে কর্মরত ৯ জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়।শেখ রেহানার মনোনিত প্রতিনিধি বেগম মঞ্জিলা ফারুক বাড়িটি হস্তান্তরের জন্য হাইকোর্টে রীট আবেদন করেন। রীট মামলা থাকা সত্ত্বেও সরকার ২৭ মার্চ ২০০৩ তারিখে বাড়িটি ডিএমপিকে বরাদ্দ দিয়ে দখল বুঝিয়ে দেয়।বিএনপি সরকার ২৭ জুন ২০০৫ তারিখে শেখ রেহানার এই বাড়িটিকে ধানমন্ডি থানার কার্যালয়ে পরিণত করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেদিন এই থানা ভবন উদ্বোধন করেন। 
২৮/০৬/২০০৫ তারিখে তথ্য অধিদপ্তর সূত্রে প্রকাশিত খবরে জানানো হয় 'ধানমন্ডি থানা ধানমন্ডি ৬নং রোডে একটি ভাড়া বাড়িতে স্থানান্তর করা হয়েছে।' কত বেশি হীনমন্য হলে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বেআইনীভাবে অন্যের বাড়িদখল করে সেই বাড়ি থানাতে রূপান্তরিত করেন?তৎকালীন সরকার ০৫/০৯/২০০৫ তারিখে শেখ রেহানার নামে বরাদ্দকৃত বাড়ী যা পরবর্তীতে ধানমন্ডি থানা, সেখান থেকে এক কাঠা জমি প্রতিবেশী সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে (যার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার কথা ছিল)বরাদ্দ দেয়।খালেদা জিয়া তখন ঢাকা ক্যন্টনমেন্টের বিলাস বহুল বাড়িতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। গুলশানের ৩২ কাঠার বাড়ি তো আছেই।মঈনুল রোডের বাড়িটি ছিল ১৬৮ কাঠার। আশপাশের জায়গা-জমি দখল করে বাড়িটি দাঁড়িয়েছিল ২২৮ কাঠায়। প্রচলিত আইন অনুযায়ী একই ব্যক্তি একই সাথে দুটি সরকারী জমি /বাড়ী ভোগ করতে পারেন না। তিনি তাঁর করা এ আইনটি লঙ্ঘন করে জাতিকে কী বোঝাতে চাইলেন?
ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বাড়িটির বরাদ্দ বাতিল করে। তিনি উচ্চ আদালতে গিয়েও অবৈধ দখলকে বৈধ করতে পারে নি। আদালতের রায় বিরুদ্ধে যায়। ফলে তিনি বাড়ী ছাড়তে বাধ্য হন। অবৈধ দখলে রাখা বাড়িটি ছাড়ার সময় তার অঝোরে কান্না মানুষ দেখেছে। এমনকি জিয়ার মৃত্যুর দিন, ৩০ মে ১৯৮১ তেও তার এমন কান্না কেউ দেখেনি।শেখ রেহানার কোনো বাড়িঘর ছিল না। জাতির পিতার কন্যা হিসেবে সরকার তাঁকে একটি বাড়ি দিয়েছে। বাড়িটি জবর দখল করা হলো। জাতির পিতার কন্যা হওয়াটাই কি শেখ রেহানার অপরাধ? পরবর্তীতে শেখ রেহানা রীট মামলা প্রত্যাহার করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন যে বাড়িটি সরকারকে দিয়ে দেবেন। খালেদা জিয়ার গুলশানের বাড়ির মতো ভাড়া দিলেও এই ১১ বছরে কমপক্ষে তিন কোটি টাকা ভাড়া পেতেন। সরকার তা দেয় নাই। বাড়িটিতে থানা হয়েছে। থানার পুলিশ স্থানীয় জনগণকে নিরাপত্তা দিচ্ছেন। এ বাড়ি থেকে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত হচ্ছে। জনগণের সেবার জন্য বাড়িটি তিনি সরকারকে দিয়ে দিচ্ছেন। জাতির পিতার কন্যা হিসেবে তিনি বাংলার জনগণের স্নেহ-ভালোবাসা নিয়ে বাকী জীবনটা কাটাতে চান।

রাজাকারদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে নেই, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই, গণর‌্যালিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, যাদের আমরা পরাজিত করেছি, নির্বাচন করার জন্য সেই পাকিস্তানের কাছ থেকে ৫ কোটি রুপি নিয়েছেন কেন- দেশবাসীর কাছে তার জবাব দিতে হবে। দেশ বেঁচে দেওয়ার কথা বলেন, টাকা নিয়ে কে দেশ বেঁচে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, পাকিস্তানের আদালত তা প্রকাশ করেছে। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে আওয়ামী লীগের গণশোভাযাত্রার আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে বিএনপি উন্মাদ হয়ে গেছে। গত ডিসেম্বরে তারা এ নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে কিন্তু সফল হয়নি।আবারো স্বাধীনতার মাস মার্চে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বাংলার জনগণ তা প্রতিহত করবে তিনি বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের যতই বাঁচানোর চেষ্টা করুন না কেন, এই মার্চে রাজাকারদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে নেই। বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। স্বাধীনতার চেতনায় দেশকে গড়ে তুলব।তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ভোট চুরি করে বলেই আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলে যত নির্বাচন হয়েছে, তার কোনোটিতেই কারচুপি হয়নি, একটি জীবনও ক্ষয় হয়নি। এ জন্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর দরকার নেই। বিএনপি ক্ষমতায় আসে লুট করার জন্য আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক এলে কি কোলে তুলে আপনাকে ক্ষমতায় বসাবে? গত তত্ত্বাবধায়কের অত্যাচার নির্যাতনের কথা কি ভুলে গেছেন। তারা তো আপনাকে জেলে দিয়েছে, আপনার দুই ছেলেকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছে। এবার এলে তাদের ধরে এনে জেলে দেবে। সেটা ওনার মনে রাখা উচিত। শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধান সংশোধন করে স্বাধীনতার চেতনায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের সব শ্রেণীর মানুষকে যে কী অত্যাচার করেছিল, বাংলার মানুষ তা ভোলে নাই। ১৪-১৫ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। দেড় হাজার সাংবাদিককে নির্যাতন করা হয়েছে, ৭০০ কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। তাঁরাই আবার বড় কথা বলেন। এ সময় খালেদা জিয়ার উদ্দেশে 'চোরের মায়ের বড় গলা' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজাকারদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে নেই, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই, গণর‌্যালিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন না, তিনি আইএসআইয়ের দালাল: সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম
বুধবার | ৭ মার্চ ২০১২ | ২৪ ফাল্গুন ১৪১৮
শেখ হাসিনা আরো বলেন, 'সংবিধান সংশোধন করে স্বাধীনতার চেতনায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।' তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বিএনপি ভোট চুরি করে বলেই আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলে যত নির্বাচন হয়েছে, তার কোনোটিতেই কারচুপি হয়নি, একটি জীবনও ক্ষয় হয়নি। এ জন্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর দরকার নেই। বিএনপি ক্ষমতায় আসে লুট করার জন্য আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য।'
তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেছেন, "খালেদা জিয়া দেশের স্বাধীনতার প্রতি যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, তা প্রতিহত করতেই এই সমাবেশ। তিনি বলেন, '৯১-এর নির্বাচনে আইএসআই খালেদা জিয়াকে ৫ কোটি টাকা উপহার দিয়েছিল। তিনি আইএসআইয়ের দালাল ও পেইড এজেন্ট। তিনি মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন না, স্বাধীনতায়ও বিশ্বাস করেন না।' তিনি আরো বলেন, 'যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে তাদের পক্ষ নিয়েছেন। সরকার যাতে বিচার শেষ করতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র করছেন।' সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'সংসদে আসুন। আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকলে সেটা তুলে ধরুন। সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে।'

Saturday, December 10, 2011

প্রয়োজনে পদ্মা সেতু বেসরকারি খাতে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে অভিশাপমুক্ত করতে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার এদেশের মাটিতে করতেই হবে। 
এজন্য একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারেও দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, একাত্তরে এ দেশেরই সন্তান হয়ে যুদ্ধাপরাধীরা দেশের বিরুদ্ধে গাদ্দারি ও মোনাফেকি করেছে। হাজার হাজার মানুষ খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে আমরা দেশকে অভিশাপমুক্ত করতে চাই। বিরোধী দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাতিল তথা এ বিচার প্রক্রিয়াকে বানচাল করতে চায় দেশবাসী তাদের বিচার করবে। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়া সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার জন্য মূলত এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রয়োজনে পদ্মা সেতু বেসরকারি খাতে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে একাত্তরের মত ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  ১১ ডিসেম্বর ২০১১, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪১
গতকাল শনিবার গণভবনে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের জন্য আর অপেক্ষা নয়, প্রয়োজনে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের (পিপিপি) মাধ্যমে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করা হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথায়, কিভাবে এবং কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে তা বিশ্বব্যাংককেই প্রমাণ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন রেখে আরো বলেন, বিশ্বব্যাংক কী পদ্মা সেতু নির্মাণে কোনো টাকা দিয়েছে? টাকা না দিলে দুর্নীতি হলো কোথায়? পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যেভাবেই হোক এ সেতু আমরা নির্মাণ করবো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিপরিষদ রদবদল একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এখন তো আগের যোগাযোগ মন্ত্রী নেই। তাই এবার বিশ্বব্যাংক প্রমাণ করুক কোথায় দুর্নীতি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু নির্মাণ, টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গ উঠে আসে।
প্রধানমন্ত্রী তার তিন দিনের মিয়ানমার সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, এ সফরকালে প্রেসিডেন্ট ইউ থেয়িন সেয়িনের সাথে আন্তরিক পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় বিদ্যুত্ ও জ্বালানি, সরাসরি সড়ক, আকাশ ও নৌ পথে যোগাযোগ স্থাপন, দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ, প্রতিরক্ষা, কৃষি, শিক্ষা ও পল্লী উন্নয়ন এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বিষয় অগ্রাধিকার পায়। এ সময় আমি মিয়ানমারকে পানি বিদ্যুত্ প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছি। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে অথবা সরাসরি ক্রেতা হিসেবে সেদেশ থেকে আমরা বিদ্যুত্ কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছি। এছাড়া বাংলাদেশে বিদ্যুত্ ও সার উত্পাদনের জন্য মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানিরও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উন্নয়ন সম্ভাবনাকে যথার্থভাবে সদ্ব্যবহারে দু'দেশের মধ্যে বহুমুখী যোগাযোগ স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ককে কার্যকর রূপ দিতে হলে মিয়ানমারের অংশগ্রহণ একান্তভাবে দরকার। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, চট্টগ্রাম এবং সিতই-ইয়াংগুন বন্দরের মধ্যে সরাসরি বাস চলাচল পুনরায় চালু করার প্রস্তাবও মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টকে দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে এখনো অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠককালে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়গুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য দু'দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া এফবিসিসিআই এবং ইউনিয়ন অব মিয়ানমার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি'র মধ্যেও স্বাক্ষরিত হয়েছে একটি সমঝোতা স্মারক। এতে দু'দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মিয়ানমারের পর ইন্দোনেশিয়ায় দু'দিনের সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাত ডিসেম্বর আমি ৪র্থ বালি ডেমোক্রেসি ফোরামে অংশ নিতে যাই। বালিতে পৌঁছানোর পর ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইয়োধোইয়োনোর সাথে আমার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। এ বৈঠককালে দু'দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়ন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এ বৈঠকের প্রথম অধিবেশনে কো-চেয়ার হিসেবে আমার সভাপতিত্ব করার সুযোগ হয়। ফোরামে গণতন্ত্র ও উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং আলোচনার মাধ্যমে এ অঞ্চলের প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমি সাত দফা প্রস্তাব পেশ করেছি। জাতিসংঘে আমার উত্থাপিত শান্তির মডেলকে সমর্থন দেয়ার জন্যও ফোরামে অংশগ্রহণকারী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। কারণ প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জন একটি দীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। এজন্য প্রয়োজন সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। ফোরাম শেষে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে আমি জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আমি বলেছি, দারিদ্র্য বিমোচন ও নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত হচ্ছে, অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের পথকে চিরতরে বন্ধ করা।
টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বার্থের কথা ভুলে যান। আর বিরোধী দলে গেলে তার সব মনে পড়ে। একজন (এরশাদ) আজ লংমার্চ এবং অন্যজন (খালেদা জিয়া) বিপ্লব করছেন। এরশাদ দীর্ঘ নয় বছর এবং খালেদা জিয়া দুই মেয়াদে ১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তখন তারা টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে কোনো কথা বলেননি কেন? টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে বিরোধী দলীয় নেত্রী কী লিখেছেন এবং জবাবে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী তার কী জবাব দিয়েছেন তা জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হোক এমন কোনো কাজ করতে দেয়া হবে না- এ কথা আমরা ভারত সরকারকে জানিয়ে দিয়েছি। বর্তমান সরকার বিষয়টির ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। আগামীতে মন্ত্রিসভায় কোনো রদবদল হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিতে যাব না? কেউ তো তেমন কোনো অন্যায় করেননি। গত তিন বছরে কী একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কেউ বড় ধরনের কোনো অভিযোগ উত্থাপন করতে পেরেছে? তিনি বলেন, বর্তমান মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের ৯০ ভাগ এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৯৩ ভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। অতীতে কোনো সরকার কী তা করতে সক্ষম হয়েছে? তাহলে বর্তমান মন্ত্রিসভা ব্যর্থ হলো কিভাবে? দেখতে হবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিনা। বিশ্ব মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই, বরং এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছিল, কারাগারে বন্দি ছিল ২০ হাজার যুদ্ধাপরাধী। তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দেয়। কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেয়। যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে তাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেন। গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে আনে। তার স্ত্রী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করবেন, মুক্তি চাবেন-এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশবাসীকে আজ এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গে আরো বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক বিষয়টির ওপর নজরদারী করছি। ভারত জানিয়েছে তারা সেখানে কাপ্তাইয়ের মতো বিদ্যুত্ সেচ প্রকল্প নির্মাণ করবে, পানি প্রবাহে কোন ব্যাঘাত ঘটবে না। তিনি বলেন, কিন্তু ক্ষমতায় এসে প্রথম দফায় আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে সংসদীয় প্রতিনিধি দল এবং এবার দু'জন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ভারতে গিয়ে সেদেশের সরকার প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন। এ সময় তিনি বিরোধী দলের সমালোচনা করে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আজ যারা বিপ্লব করতে চাইছেন, ক্ষমতায় থাকতে তারা কী করেছেন? কেন কোন প্রতিবাদ করেননি?
প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে আরো বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি পদ্মা সেতু যেভাবেই হোক আমরা নির্মাণ করব। বিদেশে যারা এ ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করে তাদেরকে পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের আহ্বান জানাব। বেসরকারিভাবে যারা কাজ করতে চাইবে তারা সেতু তৈরি করে টাকা তুলে নিয়ে যাবে। এতে আমাদের একটি টাকাও লাগবে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীন, কোরিয়া, কাতার, সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশকেই পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নের জন্য আহ্বান জানিয়েছি। আবারও আহ্বান জানাবো। সরকার টু সরকার কিংবা যে দেশ নির্মাণ করতে চাইবে সেদেশের মনোনীত কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তি হতে পারে। তারা সেতু নির্মাণ করবে, সেতু পরিচালনা করে নিজেদের টাকা তুলে নিয়ে যাবে। তিনি জানান, বেসরকারিভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যাপারে একটি সেল গঠন করা হয়েছে। সিইও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক যেসব বিদেশী কোম্পানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, সেসব কোম্পানীকে নিয়ে আমরা সেতুটি নির্মাণ করতে যাব কেন?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিসিসি দু'ভাগ হয়েছে, তাতে বিরোধী দলীয় নেত্রীর কী ক্ষতি হলো? এ নিয়ে এতো তার মায়াকান্নাই বা কেন? তিনি তো কখনো সিটি করপোরেশনে ভোট দিতে পারেননি। ভোটারও ছিলেন না। কেননা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা ডিসিসির আওতার বাইরে। শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকাকে কোন ভাগ করা হয়নি। রাজধানীর নাগরিকদের সেবা দোরগড়ায় পৌঁছে দিতে ডিসিসিকে দু'ভাগ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ঐতিহ্যের রাজধানী নয়াদিল্লী সিটি করপোরেশনকে তিনভাগে বিভক্ত করায় সেখানে বিরোধী দল কী কোন লংমার্চ বা হরতাল করেছে কীনা প্রশ্ন রেখে বলেন, সেখানে বিরোধিতা নয় বরং বিরোধী দল সমর্থন দিয়েছে। কারণ এতে নাগরিক সেবা নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, দশটা হুন্ডা, বিশটা গুন্ডা-নির্বাচন ঠাণ্ডা, সেই অবস্থা এখন দেশে নেই। দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি, জনগণ এখন স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করছে। একটা কেন, এখন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দুটো সিটি করপোরেশনেই বিএনপি আসুক, আমাদের কোন অসুবিধা নেই। নির্বাচনে কে জিতলো বা হারলো সে ব্যাপারে আমাদের মাথাব্যথা নেই, জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে হস্তক্ষেপ ছাড়াই ভোট দিতে পারবে সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনসহ সকল উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচন কোন ধরনের হস্তক্ষেপমুক্ত নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদাহরণ টেনে বলেন, '৭৫ পরবর্তী কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে এমন অবস্থান কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি, কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে চাই।
সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

21 August Grenade Attacks on AL Rally